ভোপাল: এবার থেকে ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য আর ইংরেজি মাধ্যমের বাধ্যবাধকতা রইল না৷ এবার থেকে ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যাবে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিন্দিতেও৷ পাশাপাশি বাংলা, তামিল-সহ আরও ছ’টি ভাষায় এই দুটো কোর্স পড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আরও পড়ুন- ২০২৩ সালের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রে বদল, জানুন বিস্তারিত
এদিন মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে দেশে ডাক্তারি পাঠ্যক্রমের প্রথম হিন্দিতে অনূদিত বইয়ের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানেই শাহ জানান, ইতিমধ্যেই ১০টি রাজ্য বাংলা, তামিল, তেলুগু, মরাঠি, মালয়ালম ও গুজরাতি ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের বই অনুবাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হিন্দি ছাড়াও গুজরাতি, বাংলা, তামিল, তেলুগু, মালয়ালমের মতো আঞ্চলিক ভাষায় মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশ সরকার তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণে প্রথম পদক্ষেপ করেছে। আজকের দিনটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’’
এ দিন এমবিবিএস প্রথম বর্ষের অ্যানাটমি, মেডিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রি ও মেডিক্যাল ফিজিয়োলজির হিন্দি অনূদিত বই উদ্বোধন করেন অমিত শাহ। উপস্থিত ছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানও৷ তিনি জানান, পারিভাষিক শব্দগুলি ইংরেজি উচ্চারণ অনুসরণ করে হিন্দিতে লেখা হয়েছে। যেমন ধরুন কিডনি কথাটি দেবনাগরী অক্ষরে লেখা হয়েছে ‘কিডনি’। মধ্যপ্রদেশের ডাক্তারি-শিক্ষামন্ত্রী বিশ্বাস সারঙ্গ জানিয়েছেন, ৯৭ জন বিশেষজ্ঞ গত ২৩২ দিন ধরে গান্ধী মেডিক্যাল কলেজে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসরণ করে এই বইগুলি অনুবাদ করেছেন। অনুবাদকদের এক জন বলেন, খুবই সহজ-সরল ভাষায় বইগুলি লেখা হয়েছে। এছাড়াও অতিরিক্ত ছবি, চার্ট প্রভৃতির ব্যবহার করা হয়েছে।
তবে শুধু ডাক্তারি নয়, ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার কথাও জানিয়েছেন শাহ। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য পড়াশোনা ইংরেজির বদলে হিন্দিতে চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে৷ সুপারিশ করেছে সরকারি ভাষা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। যার মাথায় থাকবেন স্বয়ং অমিত শাহ। তবে, সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক তরুণকান্তি নস্করের কথায়, আসলে ঘুরিয়ে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ সেই কারণেই অন্য ভারতীয় ভাষার কথা বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা, হিন্দি বা অন্য কোনও ভারতীয় ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া এখনই সম্ভব নয়। এর ফলে ভারতীয় পড়ুয়ারা কেবল কারিগরিবিদ্যার বিশাল জ্ঞানভান্ডার থেকে বঞ্চিতই হবেন না, উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাধার সম্মুখীন হবেন।’’
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>