রাজ্যে নিপা আতঙ্ক! নিপা আক্রান্ত সন্দেহে বেলেঘাটা আইডি-তে ভর্তি ব্যক্তি কতটা সঙ্কটে?

রাজ্যে নিপা আতঙ্ক! নিপা আক্রান্ত সন্দেহে বেলেঘাটা আইডি-তে ভর্তি ব্যক্তি কতটা সঙ্কটে?

কলকাতা: রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপের মাঝেই ছড়াল নিপা ভাইরাসের আতঙ্ক৷ কলকাতা বেলাঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হলেন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত এক যুবক৷ প্রথমে অবশ্য তাঁকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভনিয়ে আসা হয়েছিল। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বেলেঘাটা আইডিতে নিয়ে যাওয়া হয়। শীঘ্রই তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে পুণের এনআইভি-তে পাঠানো হবে।

জানা গিয়েছে, বছর ২৬ এর ওই যুবক পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা। টানা ১১ দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন তিনি। ফুসফুসে সংক্রমণও রয়েছে তাঁর। দুটি পা-ই ফুলে উঠেছে৷ ওই যুবক কেরল থেকে রাজ্যে ফিরেছেন৷ সেখানে তিনি যাঁদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের অনেকেই নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে।  এরই মধ্যে অজানা জ্বরে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে৷ 

রাজ্যে ফেরার পর গত শনিবার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের আউটডোরে চিকিৎসার জন্য যান ওই যুবক। চিকিৎসক তাঁকে আইসোলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তাঁর অবস্থার অবনতি হলে গতকাল বিকেলে বেলেঘাটা আইডি-র আইসোলেশন কেবিনে ভর্তি করা হয় যুবককে।

নিপা-আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর চার দিন কেটে গিয়েছে৷ কিন্তু এখনও তাঁর নমুনা পুণের এনআইভি-তে পাঠাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে খুব তাড়াতাড়ি নমুনা পাঠানো হবে বলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে৷ আমাদের রাজ্যে নিপা ভাইরাস পরীক্ষার কোনও পরিকাঠামো নেই। গোটা পূর্ব ভারতেই এরকম কোনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি! শরীরে নিপা ভাইরাস বাসা বেঁধেছে কিনা, তা চিহ্নিত করার জন্য পুণের ন্যাশনাল ইনস্টটিউট অফ ভাইরোলজি-র উপরই ভারসা করতে হয় আমাদের।

নিপা ভাইরাস আসলে কী? 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফল খাওয়া বাদুড় বা ‘ফ্রুট ব্যাট’ থেকেই নিপা ভাইরাস ছড়ায়। নিপায় আক্রান্ত বাদুড়ে খাওয়া ফল কোনও মানুষ খেয়ে ফেললে, শরীরে ভাইরাস থাবা বসাতে পারে৷ অনেক সময় খেজুর গাছে ঝোলা রসের হাঁড়িতে মুখ ডোবায় বাদুড়। সেই রস খেলেও নিপা ভাইরাস ছড়াতে পারে। এছাড়া নিপা আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে এলেও এই রোগ ছড়াতে পারে৷ 

কেরলে রীতিমতো উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে নিপা ভাইরাস। এখনও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে৷  বেশ কয়েকজন আক্রান্তও হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় চলছে মাস-টেস্টিং। চিন্তার কারণ হল, নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই৷ শরীরে নিপা ভাইরাস প্রবেশ করলে হঠাৎ জ্বর আসতে পারে। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যেমাথা ব্যাথা, পেশিতে টান, ও বমি ভাব দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ভাইরাস শরীরে দ্রুত সংক্রমিত হয়। মাত্র সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে কোনও রোগী জ্ঞান হারিয়ে কোমাতেও আচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে রোগীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা উচিত বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *