আদালতে ঢোকার আগে বিস্ফোরক প্রাক্তন মন্ত্রী, পার্থর মুখে সুজন-দিলীপ-শুভেন্দুর নাম

আদালতে ঢোকার আগে বিস্ফোরক প্রাক্তন মন্ত্রী, পার্থর মুখে সুজন-দিলীপ-শুভেন্দুর নাম

কলকাতা: আলিপুর আদালতে ঢোকার আগে বিস্ফোরক প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর মুখে উঠে এল সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীর নাম৷ তিনি বলেন, ‘‘যে সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারীরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা আগে নিজেদের দিকে দেখুক৷ উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন৷ ২০০৯-১০ সিজিও রিপোর্ট পড়ুন৷ সমস্ত জায়গায় তদ্বির করেছেন শুভেন্দু-দিলীপরা৷ আমি বলেছিলাম, আমি নিয়োগ কর্তা নই, এই বিষয়ে সাহায্য দূরের কথা, কোনও বেআইনি কাজ করতে পারব না৷ শুভেন্দু অধিকারীর ২০১১-১২ সালটা দেখুন না! দেখুন না, ডিপিএসসিতে কী করেছিল।” 

আরও পড়ুন- নির্দেশ ছাড়া নিয়োগ সম্ভব নয়, ২০১৬ উচ্চ প্রাথমিক নিয়ে হাইকোর্টে SSC

এদিন আদালতে নিয়ে আসার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লক্ষ করে ‘চোর চোর’ স্লোগান ওঠে৷ এর পরেই মুখ খোলেন তিনি৷ নিয়োগ দুর্নীতিত কাঠগড়ায় ওঠা পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিশানা করেন বিরোধীদের৷ তাঁর দাবি, যে সমস্ত নেতারা এখন ‘বড় বড়’ কথা বলছেন তাঁরাই এক সময় চাকরির জন্য বিভিন্ন লোকের নাম পাঠিয়ে তদ্বির করেছিলেন।

এদিন নিয়োগ দুর্নীতিতে বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের নাম জড়াতেই পাল্টা জবাব দেন তিনি। দিলীপ বলেন, ‘‘জেলে গিয়ে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। উনি যে সময়ের কথা বলেছেন, সেই সময় আমি রাজনীতিতেই আসিনি। এ সব চক্রান্ত করে লাভ হবে না। প্রমাণ হলে জেল খাটব। কিন্তু উনি তো বান্ধবী সমেত জেলে গিয়েছেন। টাকার পাহাড় সবাই দেখেছেন।’’

নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার অয়ন শীলের বিষয়েও এদিন প্রশ্ন করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। জানতে চাওয়া হয় অয়ন শীলকে কতদিন ধরে চেনেন? প্রশ্ন শুনে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর সাফ জবাব, ‘‘আমি কোনও শীলকে চিনি না।” প্রসঙ্গত, আদালতে গতদিনের শুনানির সময় বিচারকের উদ্দেশ্যে হাতজোড় করে প্রাক্তন মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমাকে ৫ মিনিট সময় দিন। আমার কিছু বলার আছে।’’  আজ আদালত কক্ষের ভিতরে পার্থবাবু কোনও মন্তব্য করেছেন কিনা, তা অবশ্য জানা যায়নি৷ 

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নাম জড়িয়ে আপাতত গারদের আড়ালে দিন কাটছে পার্থর। দল থেকেও সাসপেন্ড হয়েছেন। কিন্তু দলের বিরুদ্ধে একটি বারের জন্যেও মুখ খোলেননি। তবে এবার দুর্নীতির অভিযোগ তুলেই সরাসরি বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। নিশানায় ছিল দিলীপ এবং সুজনও৷ প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়েছে৷ 

তৃণমূলের বহিষ্কৃত মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এদিনের উক্তির সঙ্গে অদ্ভুত মিল রয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ কুণাল ঘোষের টুইটের৷ এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতোই সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে টুইট করেন কুণালও৷  সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘শিক্ষায় নিয়োগ-বিতর্ক। দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য ও আরও কয়েকজন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি? তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি? তদন্ত হোক। কেন্দ্রীয় এজেন্সি একমুখী কাজ না করে নিরপেক্ষ কাজ করুক।’’