কীর্তনের ইতিহাস রক্ষা ও জনপ্রিয়তা ফেরাতে এবার রিসার্চ অ্যাকাডেমি

কীর্তনের ইতিহাস রক্ষা ও জনপ্রিয়তা ফেরাতে এবার রিসার্চ অ্যাকাডেমি

 কলকাতা:  বঙ্গে শ্রী চৈতন্যদেবের হাত ধরে সঙ্গীতের যে ধারা জনপ্রিয় হয়েছিল, তা হল কীর্তন৷ যা পরবর্তীতে প্রভাবিত করেছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেও। এই গান যেমন ভক্তকুলকে নাচিয়ে তুলতে পারে, আবার  চোখে জলও আনে৷ কীর্তনের সুরে ভক্তি বা প্রেমরসের আবেগে ডুব দেয় ভক্তরা। তবে, হালফিলের চটুল ও চটজলদি গানের যুগে কীর্তন অনেকটাই ব্যাকফুটে। এবার সেই প্রাচীন সঙ্গীতের ধারাকে বাঁচিয়ে তুলতেই তৈরি হচ্ছে কীর্তন গবেষণা ও প্রশিক্ষণশালা। এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টার।

সম্প্রতি প্রাচীন পুঁথি এবং পাণ্ডুলিপি সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছিল এই সংস্থা। এবার কীর্তনকে নতুন করে অক্সিজেন জোগাতে তৈরি তারা৷  রিসার্চ সেন্টারের ডিন সুমন রুদ্রের কথায়, সারা বছর কীর্তন বিষয়ক সম্মেলনের পাশাপাশি সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং কর্মশালার আয়োজনও করা হবে। কীর্তনের ইতিহাস নিয়ে একটি তথ্যচিত্রের কাজও শীঘ্রই শুরু করা হবে। কীর্তন বিশেষজ্ঞ দেবলীনা ঘোষ বলেন, দ্বাদশ শতাব্দী থেকে বাংলায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গান ও সাহিত্যের ধারা প্রবাহমান। দ্বাদশ শতকের শেষের রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি ছিলেন জয়দেব। যিনি রাধাকৃষ্ণের প্রেম নিয়ে সংস্কৃত কাব্য ‘গীতগোবিন্দ’ রচনা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে, কবি বিদ্যাপতি প্রাচীন ভাষা মৈথিলিতে অনেক জনপ্রিয় রাধাকৃষ্ণ পদ রচনা করেন। চৈতন্য মহাপ্রভুর ভক্তি আন্দোলনের সময় জয়দেব, বিদ্যাপতি এবং অন্যান্য কবির সৃষ্টি কীর্তন গানগুলি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।  

কীর্তনের হারানো জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি এর প্রাচীন রূপটি সংস্কারের উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। সঠিক পদ্ধতিতে গান গাওয়া এবং এর অবিচ্ছেদ্য বাদ্য শ্রীখোলের প্রসার ঘটানোও এই সংস্থার অন্যতম লক্ষ্য। কীর্তন সম্পর্কিত সমস্ত বইপত্র, স্বরলিপিও সংরক্ষণ করবে তারা৷