স্টকহোম: যুদ্ধের আগুনে পুড়ছে ইউক্রেন৷ রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ছিন্নিভিন্ন একটা দেশ৷ সম্মুখ সমরে নেমেছে কিয়েভও৷ পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে তারা৷ এই তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ক্রমাগত শান্তি স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের দুই মানবাধিকার সংগঠন৷ এই কাজে অনন্য নজির গড়েই ২০২২ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেল রাশিয়ান হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনাল মেমোরিয়াল এবং ইউক্রেনিয়ান হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন সেন্টার ফর সিভিল লিবারটিস।
আরও পড়ুন- ‘ভাষার ছুড়ি ছিঁড়ে ফেলবে কল্পনার পর্দা’, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন ফরাসি লেখিকা অ্যানি
দুই দেশ যখন রণক্ষেত্রে লড়াইয়ে সামিল, তখন রাশিয়া ও ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লাগাতার কাজ করে গিয়েছে এই দুই মানবাধিকার সংস্থা। সেই কারণেই এই দুই সংস্থাকে চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারে সম্মানিত করা হল। ইউক্রেনে মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্যই গড়ে উঠেছিল সেন্টার ফর সিভিল লিবারটিস। সে দেশের নাগরিক সমাজকে আরও মজবুত করার ক্ষেত্রে এই সংগঠনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান ঘোষণা করার পর সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায় এই মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা।
অন্যদিকে ১৯৮৭ সালে রাজধানী মস্কোতে প্রতিষ্ঠিত হয় হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন মেমোরিয়াল। ১৯৯১ সালে কমিউনিস্ট রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে সে দেশে যুদ্ধপরাধীদের হাত থেকে মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিল এই সংগঠন। তারা বিশ্বাস করে, পুরনো অপরাধকে সমূলে উপড়ে ফেলতে না পারলে নতুন অপরাধকে জন্ম নেওয়া থেকে আটকানো যাবে না। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই আইনের পথে মানবাধিকার প্রচেষ্টার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে চলেছে এই রুশ সংগঠন।
এদিকে, নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতে নিলেন বেলারুশের মানবাধিকার রক্ষা কর্মী এলস বিয়ালিয়াটস্কি। বেলারুশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তিনি অন্যতম যোদ্ধা। নিজ ভূমিতে শান্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন লড়াই করে গিয়েছেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ‘ভিসানা’ নামে একটি সংস্থা তৈরি করেন এলস। যার অন্যতম লক্ষ্যই ছিল রাজনৈতিক বন্দিদের উপর অত্যাচার বন্ধ করা। তবে এই কাজ মোটেও সহজ ছিল না৷ ২০২০ সালে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে বেলারুশ সরকার। বিনা বিচারে তাঁকে বন্দিও করা হয়। শত বাধা সত্ত্বেও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই থেকে এক চুলও সরে আসেননি এলস বিয়ালিয়াটস্কি৷ গত বছর নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন ফিলিপিন্সের সাংবাদিক মারিও রেসা এবং রুশ সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ৷ বাক স্বাধীনতা রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য নোবেল সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন তাঁরা৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>