সত্যিই কী সন্দেশখালি রাজ্যের ‘দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম’ হয়ে উঠবে? চর্চা তুঙ্গে

সত্যিই কী সন্দেশখালি রাজ্যের ‘দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম’ হয়ে উঠবে? চর্চা তুঙ্গে

sandeshkhali

নিজস্ব প্রতিনিধি: সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম, বিশেষ করে নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই পশ্চিমবঙ্গে পালাবদল হয়েছিল। ৩৪ বছরের বাম শাসন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ২০১১ সালে। ক্ষমতায় আসেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে সামনে এসেছে সন্দেশখালি ইস্যু। অনেকেই যাকে ‘দ্বিতীয় নন্দীগ্রাম’ আখ্যা দিচ্ছেন। যেভাবে পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে নন্দীগ্রামে আন্দোলন করেছিলেন, তার অনেকটাই মিল দেখা যাচ্ছে উত্তর চব্বিশ পরগনার নদী ঘেরা অঞ্চল সন্দেশখালিতেও। তাই রাজনীতির কারবারিদের একাংশ এই প্রশ্ন তুলছেন যে, তবে কী সন্দেশখালি কাণ্ড তৃণমূলের পতনের কারণ হবে?

সদ্য এই দাবি করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি সাফ জানিয়েছেন সন্দেশখালির ভয়াবহ ঘটনার জেরেই তৃণমূল সরকারের পতন হবে। তাঁর কথায়, “সন্দেশখালি তথা পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা ভয়াবহ। বাস্তব ঘটনা তুলে ধরতে গেলে সাংবাদিককেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। সন্দেশখালিতে যা ঘটেছে তা কল্পনাও করা যায় না। তবে আইন আইনের পথেই চলবে। সেখানে যা হয়েছে তার জন্যেই তৃণমূল সরকারের পতন হবে।নারীদের উপর নৃশংস অত্যাচার হয়েছে সেখানে। সবটাই জানত রাজ্য সরকার। একটা সিন্ডিকেট চলছিল ওখানে। যা এখন সামনে এসেছে। তৃণমূল যা ইচ্ছে তাই করে যাবে, এটা দিনের পর দিন চলতে পারে না। মানুষ আর চুপ করে বসে থাকবে না। যে সরকারের আমলে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটে তা বেশিদিন টিকবে না। সন্দেশখালির ঘটনাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পতনের কারণ হবে।” শুধু অসমের মুখ্যমন্ত্রী একা নন, বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা-নেত্রী একই দাবি করছেন।

সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিজেপির রাষ্ট্রীয় অধিবেশনে মুখ খুলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। রাজনাথের পাশাপাশি বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব এই ইস্যুতে তৃণমূলকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন।

গত বিধানসভা নির্বাচনে মহিলাদের ভোটের বড় অংশ তৃণমূল পেয়েছিল, এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহল। এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে মেয়েদের জন্য বড় ঘোষণা করেছে তৃণমূল সরকার। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের টাকা অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সন্দেশখালিতে যেভাবে মেয়েরা অত্যাচারিতা হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তাতে উদ্বেগ বেড়েছে তৃণমূলের। তবে কী এর প্রভাব গোটা বাংলার মহিলা জনগোষ্ঠীর উপর পড়বে? এই প্রশ্নকে উড়িয়ে দিতে পারছে না রাজনৈতিক মহল। এর প্রভাব যদি সত্যিই ভোটবাক্সে পড়ে তবে বহু লোকসভা কেন্দ্রের ফলাফল নিমেষে এদিক ওদিক হয়ে যেতে পারে। আর সেই সূত্রেই নন্দীগ্রাম ও সন্দেশখালির মধ্যে অনেকেই মিল খুঁজে পাচ্ছেন। তবে সেই ভাবনা কতটা সঠিক তার উত্তর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলেই বোঝা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + nine =