ফের সৌরঝড়ের অশনিসঙ্কেত ? কী বলছে নাসা

ফের সৌরঝড়ের অশনিসঙ্কেত ? কী বলছে নাসা

নিউইয়র্ক:  ফের সৌর ঝড় নিয়ে সতর্ক করল নাসা৷ পৃথিবীর বুকে শক্তিশালী সৌরঝড় আছড়ে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ একটি গোটা সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে একটি সৌরঝড়৷ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন সূর্য একটি নতুন সৌর চক্রে প্রবেশ করেছে৷ এই সূর্য থেকে মহাকাশে বিভিন্ন পদার্থ নিক্ষিপ্ত হয়৷ যা পৃথিবীর পরিবেশকেও নষ্ট করতে পারে৷ 

আরও পড়ুন- সাংবাদিকের হাত ধরে খোঁজ মিলল পৃথিবীর লুকনো পঞ্চম আধা চাঁদের

১৮৫৯  সালের ১  সেপ্টেম্বর৷ ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিচার্ড ক্যারিংটন ও রিচার্ড হজসন সূর্যের গায়ে একটি আকষ্মিক দাগ দেখতে পেয়েছিলেন৷ তাঁর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল একটি শিখা। ক্যারিংটন বলেছিলেন, এই শিখাটি ছিল “তীব্র উজ্জ্বল”৷ এবং মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে টেটি সূর্যের গা ঘেষে বাম থেকে ডানদিকে সরে যায়৷ এর পরেই সম্পূর্ণরূপে তা অদৃশ্য হয়ে যায়৷  বিশাল এই সৌরঝড়ের কয়েক দিনের মধ্যেই মেরু প্রদেশে পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছিল। সৌরঝড়ের জেরে বিদ্যুতের তারে আগুন ধরে গিয়েছিল। এবং সেটাই ছিল সাম্প্রতিক অতীতে পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়া সবথেকে শক্তিশালী সৌরঝড়। 

এর পর আর কোনও সৌরঝড় হয়নি তেমনটা কিন্তু নয়। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যে, এতদিনে এমন কোনও শক্তিশালী সৌরঝড়ের উৎপত্তি হয়নি যা মানবজাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তবে আশঙ্কা, নতুন সৌরচক্রের শুরুতেই খুব শক্তিশালী সৌরঝড় পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে। যার সম্মুখীন হওয়ার জন্য মানব সভ্যতা প্রস্তুত নয়।  এই সৌরঝড় বড়সড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

সৌর ঝড় আসলে কী?

সৌরঝড় হল একটি ধ্বংসলীলা৷ সূর্যপৃষ্ঠে অগ্ন্যুৎপাত ও শক্তি প্রতিনিয়ত নির্গত হতে থাকে। অগ্ন্যুৎপাত ও শক্তির সমন্বয়ে তৈরি হয় সৌর ঝড়৷ এর মধ্যে থাকে ফ্লেয়ার, প্রমিনেন্স, সানস্পট  এবং করোনাল মাস ইজেকশন বা সিএমই৷ এগুলির মধ্যে সঞ্চিত চৌম্বকশক্তি সূর্যের গরম গ্যাসকে সক্রিয় করে। কখনও কখনও সৌর ঝড় পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রর দিকে চলে আসে এবং ধাক্কা খায়। সেই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঘর্ষণের ফলে আকাশে অদ্ভুত আলোর সৃষ্টি করে।

সোলার স্ট্রিম প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৩ মিলিয়ন মাইল বেগে ধাবিত হতে পারে। সৌভাগ্যবশত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এই মহাজাগতিক ঘটনা শোষণ করে নেয় এবং এর কম শক্তি মাটি পর্যন্ত পৌঁছয়। ফলে সৌরঝড়ের শক্তি বেশি হলে তা পৃথিবীর বুথে ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের সহযোগী প্রধান অ্যালেক্সা হ্যালফোর্ডের কথায়,  প্রতি ১১ বছর অন্তর পৃথিবী সূর্যের সবথেকে কাছে চলে আসে। সেই সময়েই এই ঘটনা ঘটতে পারে। 

সৌর ঝড়ের মধ্যে যে শক্তি রয়েছে তা একটি চৌম্বক ক্ষেত্রে তৈরি করে৷ যার জেরে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র প্রভাবিত হতে পারে। একটি সৌর ঝড় স্যাটেলাইট, টেলি-যোগাযোগ এবং নেভিগেশন সিস্টেমকে বিঘ্নিত  করতে পারে। এর ফলে পাওয়ার গ্রিড ধংস হতে পারে, নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলে অন্ধকার বা ব্ল্যাকআউট হয়ে যেতে পারে৷ তবে তা প্রাণহানীর কারণ হয় না৷ কারণ আমাদের রক্ষাকবচ হয়ে থাকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল৷ 


 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =