কলকাতা: তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে নেই ঠিকই। কিন্তু আজও আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কানন’ হয়ে৷ মুখ্যমন্ত্রীর অবমাননা যে তিনি মেনে নেবেন না তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী মমতাকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানাতেন পাল্টা হুঁশিয়ার দিলেন শোভন। ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট জানান, নন্দীগ্রামের ঘটনার দিন তিনি ছিলেন দলনেত্রীর পাশে৷ শুভেন্দুর দাবি, অধিকারী নিবাস ‘শান্তিকুঞ্জ’ থেকেই নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন মমতা৷ সে কথা সম্পূর্ণ অসত্য বলে দাবি করলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। শোভন বলেন, ‘‘রাজনীতি করতে নেমে ইতিহাসকে বিকৃত করা হলে তা কখনওই মেনে নেব না। আমি এই আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বাংলার মানুষ জানেন সে দিন কী হয়েছিল।’’
আরও পড়ুন- গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর নামে চার্জশিট CBI-এর , সাক্ষী হিসাবে নাম শতাব্দী রায়ের
লক্ষ্মীপুজোয় শুভেন্দুর বাড়ির গিয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার৷ সেই সময় সেখানে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় তৃণমূলনেত্রী যে বাড়ি থেকে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন…, এই বাড়িতে (শান্তিকুঞ্জ) ছিলেন উনি। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামের ঘটনা ঘটেছিল। ২০০৮ সালের ১৩ মার্চ রাতে এই বাড়ির ছাদেই ছিলেন উনি। নন্দীগ্রাম না হলে দিদি তো …. মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন না।’’
এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে শোভন বলেন, ‘‘২০০৭ সালের ১৪ মার্চ না ২০০৮ সালের ১৩ মার্চ সেটা নিয়েই উনি ধন্দে রয়েছেন। আসলে ঘটনাটা ২০০৭ সালের ১৪ মার্চের। যে দিন নন্দীগ্রামে গুলি চলেছিল, সেই দিন আমি উপস্থিত ছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্গে। তৃণমূল ভবনে। সেটা নিশ্চয়ই শান্তিকুঞ্জ ছিল না। আমার মনে আছে দলনেত্রীর চোখে জল…। ঝরঝর করে কাঁদছেন। বললেন, ‘ওরা সবাইকে মেরে ফেলল কানন, চল আমরা নন্দীগ্রামে যাই।’ শোভন আরও বলেন, বিকেল সাড়ে ৩টে-৪টে নাগাদ আমরা রওনা হয়েছিলাম। সেদিন শুভেন্দু কোথায় ছিলেন! উনি ইতিহাসকে বিকৃতই বা করছেন কী করে?
ফেসবুকে ওই দিন যাত্রাপথের খুঁটিনাটিও শোনান শোভন৷ তিনি বলেন, ‘‘রাত সাড়ে দশটার সময় আমরা কোলাঘাট থেকে চণ্ডীপুরের দিকে বাঁক নিতেই আমাদের গাড়ি আটকানো হয়৷ আমাদের গাড়ির ঠিক সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল গাড়ি। দেখলাম, চারপাশ থেকে আমাদের ঘিরে ধরেছে বহু মানুষ। তাঁদের হাতে গাঁইতি, কোদাল। তারা বলছে, পুলিশ, মিডিয়া এমনকি সহকর্মীদেরও যেতে দেওয়া হবে না। একমাত্র মমতা ব্যানার্জি যেতে পারেন। এ দিকে ওঁরও জেদ, ‘আমি নন্দীগ্রাম যাবই।’ সে দিন আমিই এগিয়ে গিয়েছিলাম। পরিস্থিতি দেখে শুনে ওঁকে বলেছিলাম, ‘আপনাকে ওরা মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। তাই কাউকে যেতে দেবে না বলছে। আপনি ফিরে চলুন।’ সে দিন শুভেন্দু চণ্ডীপুরে আসেননি কেন? কোথায় ছিলেন তিনি? নিজেকে তিনি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের হোতা বলে দাবি করেন!’’
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>
