শিশুরা করোনা আক্রান্ত হলে কী ভাবে হবে চিকিৎসা? গাইডলাইন রাজ্যের

শিশুরা করোনা আক্রান্ত হলে কী ভাবে হবে চিকিৎসা? গাইডলাইন রাজ্যের

কলকাতা:  করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল গোটা দেশ৷ তার উপর এবার করোনার মারণ থাবা পড়েছে শিশুদের উপরেও৷ ভারতে করোনা আক্রান্তের মধ্যে ৫.৮ শতাংশ শিশু৷ ১ লক্ষ আক্রান্তের মধ্যে ৮ জন শিশুকে ভর্তি করতে হচ্ছে হাসপাতালে৷ এই পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় গাইডলাইন ছকে দিল রাজ্য৷ 

আরও পড়ুন- ‘বিজেপি হারল কেন?’ আলোচনা সভা ডেকে বিতর্কে বিশ্বভারতী, পরে বাতিল

শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে, সেই গাইডলাইনই তৈরি করে দেওয়া হয়েছে৷ এই গাইডলাইনের জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই দাবি উঠছিল৷ সেই মতোই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল৷ এই কমিটির পরামর্শ মাফিক গাইডলাইন প্রকাশ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর৷ কোভিড আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে মোট চারটি ভাগে করা হয়েছে৷ 
যেখানে বলা হয়েছে, মাইল্ড বা মৃদু উপসর্গ থাকলে বাড়িতেই শিশুদের চিকিৎসা করাতে হবে৷ একটু বেশি উপসর্গ থাকলে অর্থাৎ মডারেট, সিভিয়র এবং ক্রিটিক্যাল এই তিনটি স্তরেই  হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে গাইডলাইনে৷ সিভিয়র এবং ক্রিটিক্যাল স্টেজে শিশুদের আইসিইউ-তে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ একইসঙ্গে ক্রিটিক্যাল স্তরে থাকলে রেমডেসিভিরের মতো ব্যয়বহুল ওষুধ ব্যবহার করা হবে কিনা, সেই গাইডলাইনও করে দেওয়া হয়েছে৷ অর্থাৎ, করোনা আক্রান্ত শিশুদের কী ওষুধ দেওয়া হবে, সেই গাইডলাইনও তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য৷ 

সবশেষে আসছে ডিসচার্জ ক্রাইটেরিয়া৷ অর্থাৎ করোনা আত্রান্ত শিশুকে কখন সুস্থ বলে মনে করা হবে, কখন তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে সেই বিষয়েও স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে৷ চিকিৎসকদের তরফে বলা হচ্ছে, এই ধরনের গাইডলাইন অত্যন্ত উপযোগী৷ কারণ এতদিন যারা আক্রান্ত হচ্ছিলেন, তাঁরা অধিকাংশই ছিলেন বয়স্ক৷ কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেখা যাচ্ছে অসুস্থ হচ্ছে শিশুরাও৷ এর মধ্যে ৮ থেকে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে আবার আইসিইউ-র প্রয়োজন হচ্ছে৷ তাদের জন্য কোভিডের এই গাইডলাইন অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে৷ 

আরও পড়ুন- বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যুতে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ, তদন্ত কমিটির নির্দেশ ফিরহাদের

স্বাস্থ্য দফতরের জারি করা নির্দেশিকায় আট বছরের কম বয়সী শিশুদের হালকা জ্বর, নাক বন্ধ, গলা ব্যথা, বমি, পেট খারাপ এবং জিভের স্বাদ চলে গেলে পর্যাপ্ত জল ও ওআরএস খাওয়ানোর কথা বলা হয়েছে। ভিটামিন সি, ডি এবং জিংক দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। জ্বর থাকলে দশ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম এর প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে যদি কোনো শিশুর চার দিনের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকে এবং অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ শতাংশ র নিচে নেমে যায় তবে তাকে মাঝারি উপসর্গ হিসাবে ধরতে হবে। অন্যদিকে নিউমোনিয়া সহ অক্সিজেনের মাত্রা নব্বই শতাংশ র নিচে নেমে গেলে সেই শিশু গুরুতর অসুস্থ হিসাবে ধরে নিয়ে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জয়দেব রায় বলেন, শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ঠিক কথাই৷ তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা বাড়িতে চিকিৎসা করেই ঠিক হচ্ছে৷ খুব অল্প সংখ্যক শিশুকে ভর্তি করতে হচ্ছে৷ তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷ তবে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৷ কারণ অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে৷ চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রতিটি রাজ্যে একটা গাইডলাইন থাকা অত্যন্ত জরুরি৷ সেক্ষেত্রে এটা ভালো পদক্ষেপ৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × three =