লক্ষ্য ২০২৪! ‘জাতীয় স্তরে পরিবর্তন আনতে’ এ বার কেসিআর-পিকের যুগলবন্দি

লক্ষ্য ২০২৪! ‘জাতীয় স্তরে পরিবর্তন আনতে’ এ বার কেসিআর-পিকের যুগলবন্দি

নয়াদিল্লি:  ২০২৪-কে সামনে রেখে জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে পালাবদল ঘটাতে  রাজনীতির আসরে তৎপর প্রশান্ত কিশোর৷ তৃণমূলের সঙ্গে বিচ্ছেদের দোড়গোড়ায় পৌঁছেও সপ্তাহ দু’য়েক আগে তাঁকে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের বর্ধিত কর্ম সমিতির বৈঠকে৷ শুধু তাই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক সারিতে দেখা গিয়েছিল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে৷ এরই মধ্যে আজ তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর) জানান, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা চলছে। লক্ষ্য জাতীয় স্তরে পরুবর্তন আনা৷ 

আরও পড়ুন- ‘এসব যত করবে, জেদ বাড়বে’, ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে বললেন অভিষেক

২০২৩ সালে তেলেঙ্গানায় বিধানসভা ভোট৷ রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, যে ভাবে তেলেঙ্গানায় গেরুয়া শিবিরের হাত শক্ত হচ্ছে তাতে আশঙ্কিত তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস)৷ সেই আশঙ্কা থেকেই পিকে’র সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন কেসিআর৷ তাঁর সাহায্য নিয়েই বিধানসভায় লড়াই করতে চাইছেন তিনি৷ একইসঙ্গে ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে টিআরএস-কে জাতীয় রাজনীতিতে তুলে ধরতেও মরিয়া রাও। মাস দু’য়েক আগে হায়দরাবাদে তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের বাগান বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন পিকে৷ 

কেসিআর অবশ্য জানিয়েছেন, প্রশান্ত কিশোর অর্থের বিনিময়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করছেন না। কারণ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরেই পিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি আর ভোটকুশলী হয়ে কাজ করবেন না। যদিও সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেও তাঁর সংস্থা আইপ্যাক এখনও রাজ্যে তৃণমূলের হয়ে কাজ করে চলছে। তবে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রেখর রাওয়ের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের ৩০০ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে বলে হায়দরাবাদে জল্পনা ছড়িয়েছিল। সেই জল্পনা উড়িয়ে এদিন কেসিআর বলেন,  ‘‘প্রশান্ত কিশোর আমার প্রিয় বন্ধু। গত ৭-৮ বছরের সম্পর্ক৷ উনি কখনও টাকার বিনিময়ে কাজ করেননি। দেশের প্রতি ওঁর যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, আপনারা তা বুঝবেন না।’’

এদিকে, কেসিআর-এর সঙ্গে পিকে’র বৈঠকের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এবং  তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের কথা হয়। ওই বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের প্রার্থী দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। এর পর সোজা মুম্বই গিয়ে শরদ পওয়ার এবং  উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বৈঠক করেন রাও। 

বিরোধী শিবিরের মত ছিল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী জোট এককাট্টা হতে পারলে ২০২৪-এ লড়াইয়ের পথ অনেকটাই প্রশস্থ হয়ে যাবে৷ কিন্তু, উত্তরপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যের বিধানসভা ভোটে জিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তবে তৃণমূলনেত্রী মনে করেন, সুযোগ এখনও রয়েছে৷ এরই মধ্যে প্রশান্ত কিশোর পটনায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন৷ কানাঘুষো, বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারেন নীতীশ কুমার৷ সেক্ষেত্রে আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী হতে পারেন তিনি৷ 

অন্যদিকে, জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে কেসিআর-কে তুলে ধরতে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে ‘কেসিআর ফ্যান ক্লাব’-এর উদ্যোগে তাঁর ছবি-সব বড় বড় হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে৷ এর পিছনেও পিকে’র মস্তিষ্ক দেখছে ওয়াকাবহাল মহল৷