চার মাস আগেই এসেছিল সতর্কবার্তা, যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ইঙ্গিত পেয়েও কানে তোলেনি রেল

চার মাস আগেই এসেছিল সতর্কবার্তা, যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ইঙ্গিত পেয়েও কানে তোলেনি রেল

 নয়াদিল্লি: বালেশ্বর রেল দুর্ঘটনার পর প্রশ্নের মুখে পড়েছে রেল৷ দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় আপ মেন লাইনে যাওয়ার জন্য সিগন্যাল সবুজ ছিল৷ কিন্তু পয়েন্ট-এর (যার মাধ্যমে ট্রেন লাইন-পরিবর্তন করে) অভিমুখ খোলা ছিল লুপ লাইনের দিকে। সেখানেই ঘটে বিপত্তি৷ প্রাথমিক তদন্তের পর করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সই তত্ত্ব৷ যা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। অথচ সিগন্যালিং ব্যবস্থার গলদের চড়া মাসুল যে আগামী দিনে দিতে হতে পারে, সে সম্পর্কে চার মাস আগেই সতর্ক করেছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিম রেলের প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার হরিশঙ্কর বর্মা! ওই জোনের জেনারেল ম্যানেজারকে এ বিষয়ে একটি চিঠিও পাঠানো হয়৷ তাতে সিগন্যালিং ও পয়েন্টের তালমিলের অভাবে ঘটতে চলা একটি দুর্ঘটনার বিষয়েও বিশদে জানান তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই এখন প্রশ্ন উঠছে, ইঙ্গিত পাওয়ার পরেও কেন সময়ে ব্যবস্থা নিল না রেল? সেই সাবধানবাণী গুরুত্ব সহকারে দেখলে এতগুলি প্রাণ খোয়া যেত না৷ 

চার মাসে আগে যে রিপোর্ট জমা পড়েছিল, তার সঙ্গে করমণ্ডলের দুর্ঘটনার ‘মিল’ রেলকে কাঠগড়ায় তুলেছে। বর্মার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৮ ফেব্রুয়ারি মাইসুরু ডিভিশনে ১২৬৪৯ আপ সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস হোসদুর্গ স্টেশন ছাড়ার পরেই আপ লাইনে যাওয়ার জন্য সবুজ সিগন্যাল পায়। কিন্তু কিছুটা এগোতেই চালক দেখতে পান,  আপ লাইনে সিগন্যাল দেওয়া থাকলেও, পয়েন্ট ডাউন লাইনের দিকে খোলা৷ সে দিনই গন্ডোগোল দেখেই ট্রেন থামিয়ে দিয়েছিলেন সম্পর্কক্রান্তির চালক৷ এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় কাজ করেছিল৷ এক ট্রেনের গতিবেগ কম থাকা ও চালকের সতর্কতা৷ সেই কারণেই সম্পর্কক্রান্তির ডাউন লাইনে যাওয়া আটকানো সম্ভব হয়েছিল। ঘটনাচক্রে,  কয়েক মিনিট পরেই ওই লাইনে একটি মালগাড়ি আসার সময় ছিল।  সে দিন সম্পর্কক্রান্তির চালক সতর্ক না থাকলে, চার মাস আগেই আরও এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকত দেশ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য মেন লাইনে যাওয়ার সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়৷ কিন্তু, পয়েন্ট খোলা ছিল লুপ লাইনের দিকে। সেই লাঘনে ঢুকে পড়েই সব লন্ডভন্ড৷ ওই লাইনে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা লৌহ আকরিক বোঝাই মালগাড়িতে ধাক্কা মারে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বর্মা রিপোর্ট মেনে ব্যবস্থা নিলে এই দুর্ঘটনা হয়তো এড়ানো সম্ভব হত৷