‘কখন কী করতে হয়, তা জানে তৃণমূল, কাউকে শেখাতে হবে না’, সাংবাদিক বৈঠকে সুদীপ-চন্দ্রিমা

দুর্নীতি ইস্যুতে দলের অবস্থান জিরো টলারেন্স

কলকাতা: আজ, শুক্রবার কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রায় দু’ঘণ্টা তৃণমূলের স্ট্র্যাটেজি বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠক করেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ সুদীপ শুরুতেই জানান, এদিনের বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ তার মধ্যে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেন তিনি৷ 

আরও পড়ুন- ব্রেকিং: টলিউডের দুর্নীতির যোগ, কুন্তলের সাড়ে ৬ কোটি টাকার লেনদেন

সুদীপ বলেন, দলের পক্ষ থেকে যে ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, তার গ্রহণযোগ্যতা সাধারণ মানুষের মধ্যে অত্যন্ত বেশি৷ এই প্রকল্পকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে হবে৷ তাঁর কথায়, এই কর্মসূচির সাফল্যের সঙ্গে বোঝা যায় তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা কোন পর্যায়ে আছে৷ সাধারণ মানুষের মধ্যে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা রাজ্য ভিত্তিক যে কোনও দলকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করাতে পারে৷ সেই অবস্থানকে আরও সুদঢ় করাই দলের লক্ষ্য৷ 

তিনি আরও বলেন, জনসংযোগের পাশাপাশি গত ১১ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গৃহীত, বাস্তবায়িত নানা কর্মসূচি গভীর ভাবে সাধারণ মানুষরে সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে একাত্ম করতে সক্ষম হয়েছে৷ আগামী দিন এই সমস্ত বিষয় নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে তৃণমূল৷ আগামী দিনে নিজেদের শক্তিতেই রাজ্য বা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দলের চিন্তাভাবনা, দর্শন, মতাদর্শ অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ 

সাংবাদিক বৈঠকে একহাত নেন বিজেপিকেও৷ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির মানসিকতা ভয়ানক৷ ভয়ঙ্কর ভাবে তারা বিরোধী দলের কন্ঠ রুদ্ধ করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা করে চলেছে৷ যা সংসদীয় গণতন্ত্রে গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাঁদের বিরুদ্ধেও আমাদের প্রতিবাদ জারি থাকবে৷ কী ভাবে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হয় সেটাই করবে তৃণমূল৷’’

ছেড়ে কথা বলেননি কংগ্রেসকেও৷ সুদীপ বলেন, বিরোধী আসনে কংগ্রেসের ভূমিকা সর্বভারতীয় স্তরে কতটা, তা জানা নেই৷ তবে রাজ্যে কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি একজোট হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে নানা ভাবে ব্যতিব্যস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ তাই আগামী দিনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করবে দল৷ আগামী ২৩ তারিখ ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের বৈঠক হবে মুখ্যমন্ত্রীর৷ ইতিমধ্যে রাজ্যে আসছেন অখিলেশ যাদবও৷  সুদীপ স্পষ্ট বলেন, কংগ্রেস এরকম করলে প্রয়োজনের সময় তৃণমূলকে পাশে চাইবে কী ভাবে৷

তিনি আরও জানান, সপ্তাহে না হলেও, মাসে অন্তত তিনদিন জেলা ভিত্তিক বৈঠক করে সাংগঠনিক শক্তিকে দৃঢ় করার দায়িত্ব সামলাবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কী ভাবে সুষ্ঠভাবে পঞ্চায়েত ভোট করা যায় সে দিকেও নজর রাখবে দল৷ তিনি সাফ জানান, কখন কী করতে হয় ভালো ভাবেই জানে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূল কংগ্রেস একলা চলার ক্ষমতা রাখে, একলা লড়তে জানে, দাবি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের৷

দুর্নীতির প্রসঙ্গে এদিন তাঁরা বলেন, তৃণমূল দুর্নীতির সঙ্গে আপোশ করবে না৷ কার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা তা সঠিক সময়ে জানানো হবে৷ যথা সময়ে সিদ্ধান্ত নেবে শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি৷ দুর্নীতি ইস্যুতে দলের অবস্থান জিরো টলারেন্স৷ যদিও এর পরেও পদ বহাল থাকল অনুব্রত মণ্ডল ও মানিক ভট্টাচার্য৷