ধর্না কর্মসূচির আয়োজক দল না সরকার? মমতার ধর্না মঞ্চে তৃণমূলের লোগো ঘিরে প্রশ্ন

ধর্না কর্মসূচির আয়োজক দল না সরকার? মমতার ধর্না মঞ্চে তৃণমূলের লোগো ঘিরে প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিনিধি:  তিনি তখন বিরোধী নেত্রী। তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করতে গিয়ে বারবার ধর্নায় বসতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ১২ বছর হয়ে গেল রাজ্য চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু পরিস্থিতির প্রয়োজনে ফের তাঁকে ধর্নায় বসতে দেখা গেল। বুধ এবং বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধর্মতলায় ধর্না কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এই কর্মসূচি কাদের তরফ থেকে করা হয়েছে? এটা তৃণমূল দলের নাকি রাজ্য সরকারের? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। কারণ নীল সাদা রং করা মঞ্চে তৃণমূলের লোগোও দেখা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ধর্না মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একটা হল আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাই বাংলার মানুষের সঙ্গে কোনও অবিচার হলে আমার উপর একটা দায়বদ্ধতা থাকে। আর দুই হচ্ছে আমি অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান। এবং এই সরকার সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই আজকের এই ধর্নাটা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে না করে আমরা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে করছি। তার কারণেই আপনারা তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো দেখতে পাচ্ছেন। সুতরাং আমি ডবল ডিউটি পালন করছি। কিন্তু আমি বিজেপির মতো সরকারের অর্থ অপচয় করে এ সব করি না। তাই এটা হল দলের অনুষ্ঠান। কিন্তু আমরা সরকারের তরফ থেকে আছি। আমাদের সব মন্ত্রীরাও আছে। এবং আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন সামনে সংবিধানও আছে। সংবিধান তারাই রাখে, যারা ভারতের গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করে। ভারতের সংবিধানকে সম্মান করে। ভারতবর্ষের নাগরিকত্ব, ভারতবর্ষের  ধর্মনিরপেক্ষতা, ভারতবর্ষের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য আজকে আমরা এখানে বসেছি।” এভাবেই বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। 

অতীতে বারবার মমতার বিরুদ্ধে বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন তিনি নবান্ন থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। যুক্তি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা নবান্ন গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। সেখানেই ঠিক হয়ে যাচ্ছে যে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেবেন। তাই প্রশাসনিক জায়গা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ‘রাজনৈতিক বার্তা’ কীভাবে দিচ্ছেন সে নিয়ে বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলেছে। যথারীতি বিরোধীদের এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু মমতার ধর্না মঞ্চে তৃণমূলের লোগো থাকায় সেই প্রশ্ন ফের নতুন করে উঠে গেল। দল এবং সরকার মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে, এই অভিযোগ ফের করছে বিরোধীরা।

এই পরিস্থিতিতে সবার একটাই প্রশ্ন, এই ধর্না কর্মসূচি থেকে কতটা ফায়দা তুলতে পারবে তৃণমূল? এর ফল কী পঞ্চায়েতের ভোট বাক্সে পড়বে? রাজনৈতিক মহল মনে করছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগকে তৃণমূল অন্যতম প্রধান ইস্যু করে ময়দানে নামবে বলেই মুখ্যমন্ত্রী এই ধর্না কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতৃত্বকে। তাই মমতার এই প্রতিবাদ আন্দোলন পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে কতটা ডিভিডেন্ড দেয় এখন সেটাই দেখার।

ঘোষণা

এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের নিজস্ব। প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের পাতায় নাও দেখা যেতে পারে৷ ফলে, সব খবরের জন্য অবশ্যই নজর রাখুন https://aajbikel.com/ -এই লিঙ্কে৷

আমাদের ফেসবুক পেজ – https://www.facebook.com/Aajbikal

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল- https://www.youtube.com/@AajBikelNews -এ নজর রাখতে পারেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 3 =