তৃণমূলের মূল টার্গেট ছিল বিজেপি, কিন্তু হঠাৎ কেন বাম-কংগ্রেসের দিকে নিশানা তৃণমূলের?

তৃণমূলের মূল টার্গেট ছিল বিজেপি, কিন্তু হঠাৎ কেন বাম-কংগ্রেসের দিকে নিশানা তৃণমূলের?

নিজস্ব প্রতিনিধি: একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না কর্মসূচি, আর সেখান থেকে সামান্য দূরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা।‌ মহানগরের এই দুই হাইভোল্টেজ প্রোগ্রাম শুধুমাত্র প্রচার মাধ্যমের আলোয় যাতে থাকতে না পারে সেই লক্ষ্যে একই দিনে ধর্মতলায় শক্তি প্রদর্শন করল বাম-কংগ্রেস। বুধবারই শ্যামবাজারে বিজেপির অবস্থান বিক্ষোভ ছিল। কিন্তু বাম-কংগ্রেসের মিছিলে যে বিপুল জমায়েত দেখা গিয়েছে তাতে প্রচার মাধ্যম বা সাধারণ মানুষ তাদের উপেক্ষা করতে পারছে না। এটাই তাদের বড় সাফল্য। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার আরও বেশি করে বামেদের নিশানা করছেন। গত কয়েক বছরে তৃণমূলের নিশানায় মূলত থেকেছে বিজেপি। কিন্তু তৃণমূল এখন বিজেপির পাশাপাশি বামেদেরও সমানতালে আক্রমণ করছে। বামেদের কটাক্ষ ঠিক জায়গায় আঘাত করা গিয়েছে বলেই তৃণমূল তাদের নিয়ে এতটা বিচলিত। যেভাবে সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী জয়লাভ করেছেন তাতে তৃণমূলের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। তৃণমূলের সবচেয়ে বড় ভরসা সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে চিড় ধরতে শুরু করেছে, এটাই তাদের চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ। তাই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বামেদের ঘাড়ে দোষ চাপাতে শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্ব।

 

বুধবার শুধু খাস কলকাতায় বাম-কংগ্রেসের মিছিল নয়, হাওড়াতেও ডিওয়াইএফফাই নেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জেলা পরিষদ অভিযান ঘিরে চোখে পড়ার মতো ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সেই জেলা  পরিষদ অভিযান ঘিরে বুধবার তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয় হাওড়ায়। মীনাক্ষির অভিযোগ বহুদিন ধরেই হাওড়া জেলা জুড়ে ভুয়ো চাকরি দেওয়ার চক্র কাজ করছে। মীনাক্ষি তৃণমূলকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, “হাওড়া জেলায় ভুয়ো চাকরির চক্র বহুদিন ধরেই সক্রিয় রয়েছে। পুলিশ বলছে তারা নাকি অভিযুক্তদের খুঁজে পাচ্ছে না। আসলে পুলিশ তাদের ধরছে না।আমরা ঠিকানা দিচ্ছি, পুলিশ তাদের ধরুক।” স্বাভাবিকভাবেই সিপিএমের কর্মসূচিতে যেভাবে ভিড় বাড়ছে তা দেখে উজ্জীবিত ‘রেড ব্রিগেড’। 

 

তৃণমূলের একটাই চিন্তা যদি সংখ্যালঘু ভোট বাম-কংগ্রেসের দিকে চলে যায় তাহলে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হতে পারে। যেহেতু রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তি অত্যন্ত কম, তাই রেজিমেন্টেড পার্টি হিসেবে চিহ্নিত সিপিএম তথা বামেদের মুখ্যমন্ত্রী বেশি নিশানা করছেন। তবে কী তৃণমূল বামেদের নিয়ে বিপদ সংকেত দেখতে শুরু করেছে? সম্প্রতি একাধিক সমবায় নির্বাচনে বামেদের কাছে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। তাই তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপির পাশাপাশি বামেদেরও সমানভাবে নিশানা করা শুরু করেছে। দলীয় নেতৃত্বও সেই পথেই হাঁটছেন। তৃণমূলের শরীরী ভাষা থেকেই স্পষ্ট যে তারা বামেদের ভয় পেতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে যে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়তে হবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই রাজনীতির কারবারিদের। সব মিলিয়ে বুধবার মহানগরে যে মহাটক্কর দেখা গিয়েছে তার অভিঘাত রাজ্য রাজনীতিতে কতটা পড়ে এখন সেটাই দেখার।

ঘোষণা

এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের নিজস্ব। প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের পাতায় নাও দেখা যেতে পারে৷ ফলে, সব খবরের জন্য অবশ্যই নজর রাখুন https://aajbikel.com/ –এই লিঙ্কে৷

আমাদের ফেসবুক পেজ – https://www.facebook.com/Aajbikal

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল- https://www.youtube.com/@AajBikelNews -এ নজর রাখতে পারেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + eight =