নয়াদিল্লি: ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি যে এখন আর প্রতিক্রিয়াশীল নয়, তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন সেনার উচ্চপদস্থ কর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুমের আইভান ডি’কুনহা। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রেক্ষিতে ANI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “পাকিস্তান যতই সেনা সদর দফতর সরাক, রাওয়ালপিন্ডি থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়া—সবই ভারতের হামলার আওতায়।”
এই মন্তব্য নিছক কথার কথা নয়, বরং একটি শক্ত বার্তা—সন্ত্রাসে মদত দিলে ভারত আর চুপ করে থাকবে না।
অপারেশন সিঁদুর: সীমা পেরোলেই পাল্টা জবাব
২২ এপ্রিল, কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়। ধর্ম জিজ্ঞাসা করে মানুষকে গুলি করা হয়েছিল। সেই নৃশংসতার জবাবেই ভারত চালায় অপারেশন সিঁদুর—যেখানে নিশানা করা হয় পাকিস্তানের ভিতরে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামোগুলিকে।
ডি’কুনহা বলেন, “এই অভিযান ছিল পরিকল্পিত, অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং প্রযুক্তি-নির্ভর। দেশের নিরাপত্তা, সেনা ও সাধারণ মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দেওয়ার দিক থেকেও এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্ভুল আঘাত India Proactive Defense Policy
অপারেশনে ব্যবহার হয়েছে ভারতের তৈরি ড্রোন, গাইডেড বোমা এবং লইটারিং মিউনিশন। সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনার মধ্যে ছিল নিখুঁত সমন্বয়। ডি’কুনহার কথায়, “পাকিস্তানকে বুঝতে হবে, শুধু সীমান্ত নয়—গভীর প্রদেশেও আমরা আঘাত হানার ক্ষমতা রাখি। আজকের ভারত আর আগের ভারত নয়।”
‘শিশুপাল ডকট্রিন’ থেকে ‘নতুন নর্মাল’
ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলে এখন সহ্যসীমা অতিক্রম করলেই সরাসরি জবাব দেওয়ার নীতি নেওয়া হয়েছে। এটি পরিচিত ‘শিশুপাল ডকট্রিন’ নামে।
ডি’কুনহা বলেন, “আমরা এক নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছি—সন্ত্রাস যেখান থেকেই আসুক, তাকে শেষ করতে হবে। আর সেই লড়াই এখনো শেষ হয়নি, শুধু থেমে আছে।”
“GHQ সরিয়ে কিছু হবে না, গভীর গর্ত খুঁজতে হবে”
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তায় তিনি বলেন, “পাকিস্তান তাদের সেনা সদর দফতর (GHQ) যদি রাওয়ালপিন্ডি থেকে সরিয়ে খাইবার পাখতুনখোয়া (KPK)-তেও নিয়ে যায়, তবুও লাভ নেই। কারণ, পাকিস্তান পুরোপুরি ভারতের রেঞ্জের মধ্যে। ওদের সত্যিই একটা গভীর গর্ত খুঁজতে হবে।” সন্ত্রাসের আশ্রয়দাতারা এবার আর রেহাই পাবে না।
রক্ত ও জলের যুগ শেষ
পাকিস্তান যদি ভাবছে, শুধু জল ছাড়লে সম্পর্ক ঠিক থাকবে—তা হলে তারা ভুল করছে। ডি’কুনহা বললেন, “আমরা জল তো দিয়েছি, কিন্তু ওরা দিয়েছে রক্ত। প্রধানমন্ত্রীর বার্তা স্পষ্ট—রক্ত ও জল একসঙ্গে বইতে পারে না।” তাঁর কথায়, ভারত শুধু আঘাত হানেনি, নতুন এক কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা নীতি গড়ে তুলেছে—যার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে জিরো টলারেন্স ফর টেররিজম।
India: India’s defense policy is now proactive, warns Lt. Gen. De Cunha, stating all Pakistan territory is within strike range after Operation Sindur. This marks a “new normal” in countering terrorism, a shift from reactive to direct response.