২০৩৮ সালের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে ভারত: রিপোর্ট

কলকাতা: ভারতের অর্থনীতির ইতিহাসে যেন নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতা সংস্থা EY (Ernst & Young)–এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০৩৮ সালের…

India second largest economy

কলকাতা: ভারতের অর্থনীতির ইতিহাসে যেন নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতা সংস্থা EY (Ernst & Young)–এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০৩৮ সালের মধ্যেই ভারত ক্রয়ক্ষমতা সমতার (PPP) ভিত্তিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে চলেছে। অনুমান করা হচ্ছে, সেই সময় ভারতের জিডিপি পৌঁছবে প্রায় ৩৪.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার–এ।

তরুণ জনসংখ্যার জোরে অর্থনীতির ত্বরান্বিত গতি

ভারতের প্রবল অর্থনৈতিক শক্তির মূলে রয়েছে দেশের জনসংখ্যাগত বৈশিষ্ট্য। ২০২৫ সালে ভারতের গড় বয়স দাঁড়াচ্ছে মাত্র ২৮.৮ বছর, অর্থাৎ, বিশ্বের সবচেয়ে তরুণ শ্রমশক্তির অন্যতম আধার হয়ে উঠছে ভারত। এই বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী আগামী কয়েক দশক ধরে উৎপাদনশীলতা ও ভোগব্যয়—দু’দিক থেকেই অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সঞ্চয়, রাজস্বশৃঙ্খলা ও শক্তিশালী দেশীয় বাজার India second largest economy

ভারতের আর্থিক ভিত্তি এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সঞ্চয় হার দ্বারা সমৃদ্ধ। এর ফলে বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প থেকে শুরু করে নতুন উদ্যোগ—সব ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের জন্য তহবিল মজবুত হচ্ছে। পাশাপাশি, যখন বিশ্বের বহু অর্থনীতি ঋণের ভারে জর্জরিত, ভারত সেখানে আলাদা অবস্থান নিয়েছে। ঋণ-জিডিপি অনুপাত ২০২৪ সালের ৮১% থেকে কমে ২০৩০ নাগাদ ৭৫%-এ নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সবচেয়ে বড় শক্তি-ভারতের অর্থনীতি মূলত ভর করে আছে দেশীয় চাহিদার উপর। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মন্দা দেখা দিলেও, ভারতের অন্তঃদেশীয় বাজারের বিপুল ভোক্তা-চাহিদা অর্থনীতিকে কার্যত স্বনির্ভর রেখেছে।

তুলনায় এগিয়ে ভারত

চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও জাপানের মতো শক্তিশালী অর্থনীতিগুলি নানা সঙ্কটে জর্জরিত। চিনের সামনে প্রধান সমস্যা দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত প্রবীণ জনসংখ্যা, আমেরিকার মাথাব্যথা ঋণের ভার, আর জার্মানি ও জাপান বৈদেশিক বাণিজ্য নির্ভরতার কারণে অনিশ্চয়তায় ভুগছে। এই প্রেক্ষাপটে, তরুণ জনগোষ্ঠী, সুবিশাল দেশীয় বাজার ও সুস্থ আর্থিক অবস্থান,ভারতকে দিয়েছে এক অনন্য সুবিধা।

বিকশিত ভারতের পথে

EY–এর চিফ পলিসি অ্যাডভাইজার ডি. কে. শ্রীবাস্তব মনে করছেন, ভারতের এই শক্তিশালী ভিত কেবল বৈশ্বিক সঙ্কট সামলাতেই সাহায্য করবে না, বরং দেশকে ২০৪৭ সালের মধ্যে “বিকশিত ভারত”-এর লক্ষ্যে পৌঁছতে কার্যকর মঞ্চ তৈরি করবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৮ সালের মধ্যেই ভারত বাজার বিনিময় হার (MER)–এর ভিত্তিতে জার্মানিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। মার্কিন শুল্কনীতির মতো সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতাগুলির প্রভাবও সীমিত থাকবে, যদি ভারত রপ্তানি-বৈচিত্র্য বাড়ায় এবং দেশীয় চাহিদাকে আরও মজবুত করে।

India: A new EY report projects India will become the world’s second-largest economy by 2038, with a GDP of $34.2 trillion in PPP terms. The report cites India’s young population, high savings rate, and strong domestic demand as key drivers for this accelerated growth.