Operation Sindoor impact
নয়াদিল্লি: কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সামরিক পরিসরে যে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ও নিরাপত্তা কাঠামোর ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। অপারেশন সিঁদুর নামে পরিচিত এই উচ্চতর কৌশলগত অভিযানে ভারতীয় বিমান বাহিনী ও স্থল বাহিনী সমন্বিত আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানে গজিয়ে ওঠা একের পর এক সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ও একাধিক সামরিক ঘাঁটি উড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সর্বোচ্চ কৌশলগত আঘাত। এর প্রভাবই সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত হওয়া থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক কূটনীতির ভারসাম্য, সবটাই পাল্টে গিয়েছে।
কেন অপারেশন সিঁদুর ১৯৯৮ সালের পোখরান-২ পারমাণবিক পরীক্ষার পর ভারতের সবচেয়ে বড় কৌশলগত অর্জন?
১. পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াল ছায়ায় ভারতীয় সংকল্পের জয়গান Operation Sindoor impact
১৯৮০-এর দশকে পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের মাধ্যমে ভারতকে নিরঙ্কুশ হুমকির মুখে ফেলে। বিশেষ করে ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ এবং ২০০৮ সালের মুম্বাই সন্ত্রাসবাদী হামলার সময় পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রকে কার্যকর একটি কূটনৈতিক ও সামরিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। সে পরিস্থিতিতে ভারত দীর্ঘদিন সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২০২৫ সালের মার্চে অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে গেল ভারত পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিহত করতে পিছপা হবে না। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল জানান, “আমরা পারমাণবিক ব্ল্যাকমেলের ছায়ায় আর থাকব না; সন্ত্রাসবাদ ও আক্রমণের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও সুসংগঠিত প্রতিক্রিয়া হবে।”
২. পাকিস্তানের রাষ্ট্র ও সন্ত্রাসের বিভাজনের অন্ত Operation Sindoor impact
দীর্ঘদিন পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ‘অ-রাষ্ট্রীয়’ দাবি করে নিজেকে দায়মুক্ত রাখার চেষ্টা করেছে। অপারেশন সিঁদুরের পর সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবাদীদের সামরিক মর্যাদাকে সমাহিত করেছে৷ তাদের রাজনৈতিক উত্তরণ আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের ‘দ্বৈতচরিত্র’ প্রকাশ করেছে। পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল কামরান হাফিজের ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের এক বিবৃতিতে স্বীকারোক্তি পাওয়া গিয়েছে, “সন্ত্রাসবাদ আমাদের কৌশলগত হাতিয়ার।” এই বাস্তবতা ভারতকে কূটনৈতিক ও সামরিক অঙ্গনে শক্ত অবস্থান নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
৩. সন্ত্রাসের আর্থিক ও মানবিক ব্যয় বহুগুণ বৃদ্ধি
সন্ত্রাস পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের ‘সস্তা’ কৌশল ছিল, যা ভারতের সীমান্ত সুরক্ষাকে কঠিন করে তুলত। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারতের আঘাতে পাকিস্তানের প্রশিক্ষণ শিবির, সরবরাহ চেইন ও অবকাঠামো ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হয়েছে। বর্তমান সময় পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, বিদেশি অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের উচ্চ ব্যয় তাদের সাধারণ জনগণের জীবনমান উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। করাচির অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ ডঃ শফকত মালিক বলেন, “সন্ত্রাসে বিনিয়োগ বেড়েছে ৫০০ শতাংশ; পাকিস্তানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
৪. ‘আত্মনির্ভর ভারত’ ও প্রযুক্তিতে এক বিপ্লব
অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় সামরিক প্রযুক্তির প্রমাণমূলক সফলতা আত্মনির্ভরতার মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রুশ ডিজাইনের Su-30MKI যুদ্ধবিমান এবং ভারত-রাশিয়া যৌথ নির্মিত ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র যুগ যুগ ধরে বিশ্বস্ত অস্ত্র হিসেবে স্বীকৃত। উন্নত IACCS (Integrated Air Command and Control System) ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি HAL এবং DRDO নির্মিত দেশীয় ড্রোন, সেন্সর ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অপারেশনে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করেছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার (অব.) রাহুল সিং বলেন, “অপারেশন সিঁদুর ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের দক্ষতা ও উদ্ভাবনের এক গর্বিত অধ্যায়।”
৫. আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বন্ধুবান্ধব ও প্রতিদ্বন্দ্বীর পরিচয়
অপারেশন সিঁদুরের ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বন্ধুবান্ধব ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের আসল চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তুরস্ক, আজারবাইজান এবং চিন পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও সামরিক সমর্থক হিসেবে প্রকাশ্যে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের অনিশ্চিত নীতিমালা ও অস্ত্র সহায়তা ভারতকে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র কৌশল গ্রহণের পথ প্রশস্ত করেছে। কূটনীতিবিদ ও অধ্যাপক ডঃ সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, “ভারত এখন বিশ্বমঞ্চে কেবল মিত্রের ওপর নির্ভর নয়, বরং স্বশক্তিতে নির্ভর করে নিজের কৌশল নির্ধারণ করবে।”
India: Operation Sindhoor marks a dramatic shift in India-Pakistan military dynamics post-Kashmir terror attack. India’s coordinated air-ground strikes decimated terror and military bases in Pakistan, deemed the highest strategic blow since 1971. This operation, under PM Modi, signals India’s resolve against nuclear blackmail and exposes Pakistan’s state-sponsored terrorism. Ajit Doval reaffirms a strong response to terror.