ইংরেজবাজ: বেতন মাত্র ৭৫০ টাকা, আর তা দিয়ে সংসার চালানোই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। নিজেদের পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মাসিক সাম্মানিক বৃদ্ধির দাবিতে একযোগে মালদার ২০০ জন পঞ্চায়েত কর আদায়কারী'রা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে পাঠালেন । বৃহস্পতিবার দুপুরে মালদা শহরের ফোয়ারা মোড় এলাকার জেলার প্রধান ডাকঘরে এসে ২০০ জন পঞ্চায়েত কর আদায়কারী'রা তাদের সাম্মানিক বৃদ্ধির কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে চিঠি পোস্ট করেন। পাশাপাশি নিজেদের দুর্দশার কথাও তুলে ধরেন পঞ্চায়েতের ওই কর আদায়কারীরা।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অধীনস্থ (আইএনটিটিইউসি) এই পঞ্চায়েত কর আদায়কারীদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে তারা জেলার সংশ্লিষ্ট গ্রামীণ এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর আদায়ের কাজ করছেন। কিন্তু এই পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তাদেরকে রাজ্য সরকার ৬০০ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত থেকে ১৫০ টাকা করে মোট ৭৫০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে সামান্য টাকায় সংসার চালানো খুব দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে ওই পঞ্চায়েত কর আদায়কারীরা জানিয়েছেন, তাদের এই দুর্দশার বিষয়টি যেন গুরুত্বসহকারে দেখা হয়। দ্রব্য-মূল্য বৃদ্ধির বাজারে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে স্ত্রী ,সন্তান এবং বৃদ্ধ বাবা – মায়েদের নিয়ে সংসার চালানো খুবই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কারণে তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এভাবেই অনুরোধ জানিয়ে সান্মানিক বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ কর আদায়কারী সমিতির রাজ্য কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নাজিব হাসান বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মোট চার হাজার পঞ্চায়েত কর আদায়কারী রয়েছেন। যার মধ্যে মালদা জেলায় রয়েছেন ২০৯ জন কর্মী। কাজের নিরিখে পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে কর আদায়কারীরা বাড়ি বাড়ি এবং বিভিন্ন সংস্থাকে রাজস্ব আদায় করেন। এই কাজের সঙ্গে কেউ ১৫ বছর, আবার কেউ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্ত রয়েছেন। কিন্তু তাদের মাসিক সাম্মানিক হিসেবে মাত্র ৭৫০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। যা সংসার চালানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাজিব হাসান আরও বলেন, এর আগেও বিষয়টি নিয়ে রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জীকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোন লাভ হয় নি। তাই এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একযোগে মালদার ২০০ জন পঞ্চায়েত কর্মী সাম্মানিক বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে চিঠি পোস্ট করেছেন।
এদিন পঞ্চায়েতের কর আদায়কারী এক কর্মী শাহজাহান আলী বলেন , সংসার চালানোর মতো সাম্মানিক আমরা পাচ্ছি না । মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক। নইলে আমাদের আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। সংসার চালানোর ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যেটা ভালো মনে করবেন সেই হিসেবে যেন পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করা হয় । এই অনুরোধ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পোস্ট করতে আসা শতাধিক পঞ্চায়েত কর আদায় কর্মীদের বক্তব্য, আমাদের আশা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আমাদের এই অসহায়তার কথা অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিবেন।