লোকসভায় ৫০ আসন কম পড়লেও বিজেপির রাস্তা খোলা! কোন সমীকরণ ভরসা?

লোকসভায় ৫০ আসন কম পড়লেও বিজেপির রাস্তা খোলা! কোন সমীকরণ ভরসা?

নয়াদিল্লি:  নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে নেই ২০টির বেশি দল! তবু লোকসভায় পঞ্চাশ আসন কম পড়লেও বিজেপি তার রাস্তা খুলে রেখেছে! কোন সমীকরণ ভরসা দিচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে?

নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ  ২০টির বেশি দল এই অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। তা সত্ত্বেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছোট বড় মিলিয়ে ২৫টি রাজনৈতিক দল থাকায় বিষয়টি নিঃসন্দেহে তৃপ্ত করেছে বিজেপিকে।

কেন নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পরিবর্তে নরেন্দ্র মোদি করবেন, এই প্রশ্ন তুলে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকবে না বলে আগেই ঘোষণা করেছে। তবে সবাই সেই রাস্তায় হাঁটতে চায়নি। এনডিএ জোটে থাকা দলগুলির পাশাপাশি আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল কেন্দ্রের পাশেই থাকল। এআইএডিএমকে, জেজেপি, আইএমকেএমকে, আজসু, আরপিআই, তামিল মানিলা কংগ্রেস, বোড় পিপলস পার্টি, আইপিএফটি, পিএমকে,  এমজিপি, অগপ, আপনা দল, সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চার  পাশাপাশি নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকল চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি, নবীন পট্টনায়কের বিজেডি, লোক জনশক্তি পার্টি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, শিরোমণি অকালি দল। সবমিলিয়ে সংখ্যাটি পঁচিশের কাছাকাছি চলে যাবে।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে এই দলগুলি কোনও ভাবেই কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে যেতে পারবে না। এমনিতেই বিজেডি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেস এনডিএ জোটে না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই নরেন্দ্র মোদির পাশে রয়েছে তারা। বিভিন্ন ইস্যুতে সংসদে তারা বিজেপির পাশেই থেকেছে। তাই নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই দুটি দল হাজির থাকবে এটাই স্বাভাবিক। অতীতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে ছিল টিডিপি ও শিরোমণি অকালি দল। কিন্তু বর্তমানে তারা এই জোটে নেই। তা সত্ত্বেও নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে যেভাবে তারা হাজির থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। নিজেদের স্বার্থেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিষয়টি নিঃসন্দেহে বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ। যখন বিজেপি বিরোধিতায় বিভিন্ন দল একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে, সেখানে এই দলগুলি গেরুয়া শিবিরের পাশেই রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আর এই সমীকরণটাই ভরসা জোগাচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে। ওয়াইএসআর কংগ্রেস, টিডিপি, বিজেডি, অকালি দল, শিবসেনা (শিন্ডে গোষ্ঠী),  এআইএডিএমকে-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট ছোট দলগুলির সমর্থন বিজেপির পাশে নিশ্চিত ভাবেই থাকবে। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে যদি হিসেব করা যায় তাহলে এই দলগুলির মিলিত আসন সংখ্যা ৬০টির কাছাকাছি চলে যেতে পারে। আর সেটাই ভরসা জোগাচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। বিভিন্ন সমীক্ষক সংস্থা এখন থেকে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে যে সমীক্ষা চালাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির ফল খুব খারাপ হলেও তাদের আসন সংখ্যা আড়াইশোর কাছাকাছি থাকবে।‌

সেটা যদি আরও কমে দু’শোর কাছাকাছি চলে যায় তাহলেও বিজেপি অনায়াসে সরকার গঠন করে দেবে এই দলগুলির সাহায্য নিয়ে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর সেই কারণেই লোকসভা নির্বাচনে ফের জয়ের ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী নরেন্দ্র মোদি। তবে বিজেপির আসন সংখ্যা যদি দু’শোর নীচেই আটকে থাকে তাহলে অবশ্য সরকার গড়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে তাদের কাছে। সবমিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই যোগ-বিয়োগের অঙ্ক যে চলতেই থাকবে তা স্পষ্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − nine =