নয়াদিল্লি: শ্রদ্ধা ওয়াকারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন স্তম্ভিত দেশ। খুনের দায়ে অভিজুক প্রেমিক আফতাব পুলিশি জেরায় অনেক কথাই বলেছে। কেন খুন, কী ভাবে খুন, সবকিছুর বিস্তারিত তথ্যও সে দিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। আগেই আফতাব জানিয়েছিল, শ্রদ্ধাকে খুনের করার পর দেহ লোকানোর বিষয়ে সে আমেরিকান সিরিজ ‘ডেক্সটার’ থেকে শিখেছিল। তবে এও এখন জানা গিয়েছে, ১২ বছর আগের আরও এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়েও গুগলে ‘পড়াশুনা’ করেছিল আফতাব। সেটি ছিল অনুপমা গুলাটি হত্যাকাণ্ড। তার সঙ্গে এই ঘটনার অনেকটাই মিল পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন- ‘আন্ডার নতুন ফান্ডা’, হলুদ নয় এখানে মুরগি দেয় সবুজ কুসুমের ডিম!
ঠিক কী ঘটেছিল ২০১০ সালে? কথা হচ্ছে রাজেশ এবং অনুপমা গুলাটিকে নিয়ে। ১৯৯৯ সালে তাদের বিয়ে হয় এবং তখন তারা আমেরিকায় থাকতেন। ২০০৮ সালে দুজনে দেহরাদুন চলে আসেন। জানা যায়, ভারতে আসার পর থেকেই তাদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। অনুপমা সন্দেহ করতেন, কলকাতার কোনও এক মহিলার সঙ্গে তার স্বামী রাজেশের সম্পর্ক আছে। সেই নিয়েই যাবতীয় অশান্তি লেগে থাকত। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসের কোনও এক রাতে রাগের মাথায় স্ত্রীকে দেওয়ালে মাথা ঠুকে আধমরা করে দেন রাজেশ। তবে আশঙ্কা করতে থাকেন যে, জ্ঞান এলে স্ত্রী পুলিশের কাছে যাবে। এই ভয়ে ওই অবস্থাতেই স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি।
পেশায় ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ এখানে থেমে থাকেননি। পুলিশ যাতে অনুপমার দেহের কোনও হদিশ না পায় তার জন্য ইলেকট্রিক করাত দিয়ে তিনি স্ত্রীর দেহ ৭০ টুকরো করেছিলেন! তার পর ফ্রিজে সেই দেহাংশ আলাদা আলাদা প্যাকেটে মুড়ে রেখে দেন। অনুপমার কাটা মাথাও আলাদা করে রেখেছিলেন তিনি। তবে এই ঘটনার ২ মাস পর তিনি ধরা পড়ে যান। দিদির খোঁজ নিতে অনুপমার ভাই রাজেশের কাছে গেলে তিনি তাকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। সন্দেহ হতেই পুলিশের কাছে যান অনুপমার ভাই। কিছুদিনের মধ্যে হাড়হিম করা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। দেহরাদুনের আদালত রাজেশকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় ২০১৭ সালে। এখন তিনি জেলেই।
বিষয় হল, শ্রদ্ধার খুনে অভিযুক্ত আফতাব এই ঘটনার ব্যাপারে গুগলে সার্চ করে পড়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। অনুমান, রাজেশের থেকেও কিছুটা ‘অনুপ্রাণিত’ হয়েছে সে। রাজেশ যেভাবে তার সঙ্গীর দেহ কেটে টুকরো করেছিল, আফতাব একই কাজ করেছে। যদিও পুলিশি জেরায় এই ইস্যুত কোনও কথা বলেনি শ্রদ্ধার প্রেমিক।
