নয়াদিল্লি: গরমকাল পড়তে না পড়তেই চলতি বছরে এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই দেশজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। দিল্লি, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান তো বটেই, সিকিম, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীরের মতো শীতপ্রধান পার্বত্য অঞ্চলেও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে তাপমাত্রা। বাদ যায়নি আমাদের রাজ্যও। প্রায় এক মাস লাগাতার ব্যাটিংয়ের পর সম্প্রতি সাইক্লোন অশনির প্রভাবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তাপমাত্রায় মৃদু ছন্দপতন হয়েছে। সেইসঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, দিল্লির মতো একাধিক রাজ্যে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। এর মধ্যেই স্বস্তির খবর দিল মৌসম ভবন। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, সাইক্লোন আসানির প্রভাবে এদেশে নির্ধারিত সময়ের আগেই বর্ষা ঢোকার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৫ মের মধ্যেই আন্দামান সাগরে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করবে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, আন্দামান সাগরে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করায় দেশজুড়ে বর্ষাকাল এগিয়ে আসার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অন্যান্যবার আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করে ২১ কিংবা ২২ মে। এবার তার পরিবর্তে ১৫ মের মধ্যেই মৌসুমী বায়ুর প্রবেশ ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে আইএমডির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবার দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও তত্সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ১৫ মে নাগাদ প্রবেশ করতে পারে। সেই সঙ্গে হাওয়া অফিসের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন আগামী পাঁচ দিনে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে কোনও কোনও এলাকায় দমকা হাওয়াও বইতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি কেরল, মাহি ও লাক্ষাদ্বীপে আগামী ৫ দিন বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এর সঙ্গেই উত্তর-পূর্ব ভারতে ফের তাপপ্রবাহ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে মৌসম ভবন। ইতিমধ্যেই রাজস্থানের মেরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড তৈরি করেছে। ওই এলাকায় তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাজস্থান ছাড়াও হরিয়ানা, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের কমপক্ষে ২৯ টি শহরে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রার পারদ ৪৪ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর। প্রবল তাপপ্রবাহের মুখে পড়েছে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলি। শুক্রবারও দিল্লিতে তাপমাত্রা ৪৪ থেকে ৪৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশের একাধিক জেলাতেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি থাকার সম্ভাবনা এদিন। এমতাবস্তায় শুক্র ও শনিবারও রাজধানীতে তাপপ্রবাহের হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে বৃষ্টিপাত প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, অন্যান্য বছরের মতো এই বছরও জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বর্ষাকাল বিরাজ করবে। দেশের মোট বৃষ্টির ৭৫ শতাংশই জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে জুলাই-আগস্ট মাসে বৃষ্টির পরিমাণ সবথেকে বেশি হয়। ওই দুই মাসেই প্রায় ৭০ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়। অন্যদিকে জুন ও সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির পরিমাণ থাকে ১৫ শতাংশ।