নয়াদিল্লি: স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে আজাদি কা মহোৎসব৷ কেন্দ্রীয় সরকারের উৎসাহে শুরু হয়েছে ‘হার ঘর তেরঙ্গা’র উদ্যোগ৷ প্রতিটি নাগরিকের হৃদয়ে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলাই এর মূল লক্ষ্য৷ প্রতিটি দেশবাসীর মনে জেগে উঠুক জাতীয় পতাকার প্রতি সচেতনতা৷ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উদযাপনের পাশাপাশি জেনে নেওয়া যাক জাতীয় পতাকার কিছু মজাদার তথ্য৷
• জাতীয় পতাকার ডাক নাম- আমরা গর্বিত ভারতবাসী জাতীয় পতাকাকে তিরঙ্গা বলে অভিহিত করে থাকি৷ এটাই আমাদের জাতীয় পতাকার ডাক নাম৷
• স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা গৃহীত হয় ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই- ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারতকে মুক্ত করার কথা ঘোষণা করতেই স্বাধীন ভারতের জন্য একটি জাতীয় পতাকার প্রয়োজন উপলব্ধি করেন নেতারা। সেই মতো পতাকার ডিজাইন চূড়ান্ত করতে অ্যাড-হক কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশেই ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই গণপরিষদ তিরঙ্গাকে স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
• জাতীয় পতাকার নকশা- পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া (ওরফে পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া) ভারতের জাতীয় পতাকার মূল নকশা তৈরি করেছিলেন। পরে সুরিয়া বদর-উদ-দিন ত্যাবির পেশ করা স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকার নকশাটি ১৯৪৭ সালের ১৭ জুলাই গৃহীত হয়৷ অনুমোদন করে পতাকা কমিটি৷
• বিদেশে পাতাকা উত্তোলন- ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট বিদেশে প্রথম অফিসিয়াল পতাকা উত্তোলিত হয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায়৷ অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের হাইকমিশন স্যার রঘুনাথ পারনাইপের বাসভবনে ভারতীয় সময় অনুসারে সকাল সাড়ে ৭টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়৷ অর্থাৎ ভারতে প্রথম পতাকা উত্তোলনের তিন ঘণ্টা আগে৷ ওই দিন সংসদ ভবনে পতাকা উত্তোলিত হয়েছিল সকাল সাড়ে দশটায়৷
• লাল কেল্লায় পতাকা উত্তোলন- ১৯৪৭ সালের ১৬ অগাস্ট সকাল সাড়ে ৮টা লাল কেল্লায় প্রথম পতাকা উত্তোলিত হয়৷ পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু৷
• জাতীয় পতাকায় চারটি রং- ভারতের পতাকাকে তিরঙ্গে বলে অভিহিত করা হলেও, এতে রয়েছে চারটি রং৷ তিনটি মূল রং হল গেরুয়া, সাদা এবং সবুজ৷ এছাড়াও সাদার উপর যে অশোকচক্র রয়েছে, তার রং নীল৷
• গেরুয়া রং- জাতীয় পতাকায় গেরুয়া রং হল- সাহস, ত্যাগ, বীরত্ব এবং ত্যাগের চেতনার প্রতীক। এটি জ্ঞান এবং কর্ম উভয়কেই নির্দেশ করে৷ গেরুয়া সাধু-সন্ত, ফকির এবং পণ্ডিতদের আধ্যাত্মিক জীবনের রং৷
• সাদা রং- তিরঙ্গার সাদা রঙ বিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি সূর্য রশ্মিরও প্রতীক৷ যা আলোর পথ নির্দেশ করে। সাদা হল শান্তি রং৷ পতাকার সাদা রঙ দেশের প্রতিটি ধর্ম এবং প্রতিটি ভাষার প্রতিনিধিত্ব করে।
• সবুজ রং- জাতীয় পতাকার সবুজ রঙ সমৃদ্ধি এবং ধরিত্রির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে বোঝায়। এটি গাছপালা, কৃষি এবং উদ্ভিদ জীবনের রঙ যার উপর অন্যদের জীবন নির্ভর করে। এছাড়াও সবুজ হল আশার সংকেত৷
• অশোক চক্রের নীল রং- আমাদের জাতীয় পতাকার নীল রং সীমাহীন আকাশ এবং অতল সমুদ্রকে বোঝায়। এছাড়াও নীল অভ্যন্তরীণ শক্তিকে চিহ্নিত করে। অশোক চক্রের অর্থ- উন্নতি ও গতিশীলতা। চক্রটিতে ২৪টি স্পোক বা কাটা আছে। ২৪ টি কাটা ২৪ টি অর্থ বহন করে। ভালবাসা, সাহস, শান্তি, মহানুভবতা, উদারতা, বিশ্বাস, আন্তরিকতা, করুণা, কমনীয়তার মতো অর্থ বহন করে এই স্পোকগুলি।
• পতাকার মাপ- জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য- প্রস্থের অনুপাত ২ : ৩। অর্থাৎ, পতাকার দৈর্ঘ্য ১৮ ফুট হলে, প্রস্থ হবে ১২ ফুট।
• পতাকা উত্তোলন- ২০০২ সালে ভারত সরকার দেশের নাগরিকদের প্রতিদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনুমতি দেয়৷ এর আগে পর্যন্ত এটি একটি মৌলিক অধিকার ছিল না৷
• পতাকা উত্তোলনের সময়- সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের আগে পতাকা উত্তোলন করা যায়৷ রাতে পতাকা উত্তোলন করা যায় না৷
• গাড়িতে পতাকা- ভিভিআইপি ব্যক্তিরা তাঁদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা রাখতে পারেন৷ এই তালিকায় রয়েছেন- রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর, ভারতীয় মিশন বা পোস্টের প্রধান, ক্যাবিনেট মন্ত্রী৷ পতাকা রাখতে পারেন- লোকসভার অধ্যক্ষ, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান, লোকসভার ডেপুটি স্পিকার, রাজ্যগুলির বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিধানসভার স্পিকার, রাজ্যের আইন পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার, ভারতের প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের সকল বিচারপতিরা, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারপতিরা৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>
