নয়াদিল্লি: লক্ষ্য ২০২৪। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে বদ্ধপরিকর কংগ্রেস সহ সব বিরোধী দল। কিন্তু যে ‘মহাজোট’ কল্পনা করা হচ্ছিল তার কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। উলটে বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেসের যে সখ্যতা আশা করা হচ্ছিল তা স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। লাগাতার একাধিক ইস্যু নিয়ে ‘হাত’ শিবিরকে আক্রমণ করে গিয়েছে ঘাসফুল বাহিনী। কটাক্ষ করেছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার যে প্রশান্ত কিশোর বাংলার নির্বাচনে তৃণমূলের তরী পার করার অন্যতম কাণ্ডারী তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়েছে বলেই রটেছিল। যদিও পরে মমতা-প্রশান্তকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিশোরের কংগ্রেস যোগের জল্পনা আরও তীব্র হচ্ছে।
আরও পড়ুন- ঘোষণাই সার, ট্রেনে বেডরোল কোথায়? বিশেষ নিয়ম ভারতীয় রেলে
গত শনিবার কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, সাংসদ রাহুল গান্ধী এবং নেতা কেসি বেণুগোপালের সঙ্গে একপ্রস্ত বৈঠক করেন প্রশান্ত কিশোর। তারপর আজ আবার দিল্লির ১০ জনপথে সোনিয়ার বাসভবনে বৈঠক হয় সোনিয়া-প্রশান্তের। তিন দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার তাদের বৈঠক হওয়ায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল অন্য কিছুর গন্ধ পাচ্ছে। সূত্রের খবর, আজকের এই বৈঠকে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, কেসি বেণুগোপাল, অম্বিকা সোনি সহ আরও বেশ কয়েকজন বরিষ্ঠ নেতা উপস্থিত ছিলেন। সকলকে নিয়েই আলোচনা সারেন সোনিয়া গান্ধী। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, প্রশান্ত কিশোরের কংগ্রেসে যোগদান এবং পরবর্তী কর্মসূচি নিয়েই এদিন আলোচনা হয়েছে। যদিও বিস্তারিত ভাবে এখনও কোনও পক্ষই কিছু জানায়নি।
গত বছরেও সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে একাধিক বার বৈঠকে বসেছিলেন ভারতীয় রাজনীতির ‘পিকে’৷ সেই বৈঠকের ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনার সূত্রপাত হয়েছিল৷ তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। যদিও যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসে যোগ দেননি পিকে। কিন্তু এখন আবার সেই জল্পনার জল গড়াতে শুরু করেছে। এর আগে কিশোরের যে বৈঠক হয়েছিল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে সেখানে তিনি তাদের একাধিক পরামর্শ দেন। কংগ্রেস যাতে ৩৭০ আসনের ওপর ফোকাস করে, বা যে রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস শক্তিশালী বা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, সেখানে তাদের একাই ভোটে লড়া উচিত, এই সব পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন- অপারেশন পরাক্রম থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের মিশন, নয়া সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডের সেনা জীবন
তবে একটা তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, কিছুদিন আগে প্রশান্ত কিশোর নিজে কংগ্রেস নেতৃত্বকে একহাত নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। কড়া ভাষায় কংগ্রেসের সমালোচনাও করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তার পরে আবার তাদের একসঙ্গে বৈঠক করার খবর রাজনৈতিক কৌতূহল বাড়াচ্ছে বৈ কমাচ্ছে না। আদতে তিনি কোন পথে হাঁটেন, সত্যি তিনি কংগ্রেসে আসেন কিনা বা আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর রসায়ন কতটা বদলায়, এখন সেটাই দেখার।