নয়াদিল্লি: অধিকাংশ সময়ের জন্য হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা থাকে এখানে। পুরু বরফ স্তর, তুষারধস নিয়মিত ব্যাপার যেন। তবে ভারতীয় সেনা কোনও কিছুতেই ভয় পায় না। তাই তো সিয়াচেনের মতো দুর্গম এলাকাতেও সর্বক্ষণ পাহারায় তারা। বর্তমানে আবার সেখানে প্রথমবারের জন্য কোনও মহিলা সেনা যোগ দিয়েছেন। তিনি হলেন ক্যাপ্টেন শিবা চৌহান। সিয়াচেন হিমবাহের সর্বোচ্চ যুদ্ধক্ষেত্রের সেনাকর্তা তিনি। তাঁর পরিচয় সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত।
আরও পড়ুন- দুধ, চা, তেল-সহ ১৯টি প্যাকেটজাত পণ্য নিয়ে কড়া কেন্দ্র! কোন বিষয়গুলি নজরে রাখবেন গ্রাহকরা?
রাজস্থানের উদয়পুরের বাসিন্দা হলেন ক্যাপ্টেন শিবা। ১১ বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনের যুদ্ধ যেন শুরু হয়ে গিয়েছিল শিবার। তবে ছোট থেকেই হার না মানা স্বভাব ছিল তাঁর। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিবা উদয়পুরের এক স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন। পরে তিনি ‘এনজেআর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি’ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং করেন। পড়াশোনা শেষ করে শিবা চেন্নাইয়ের ‘অফিসারস ট্রেনিং অ্যাকাডেমি’ থেকে প্রশিক্ষণ নেন।
এরপর ২০২১ সালে ভারতীয় সেনার ‘ইঞ্জিনিয়ারিং রেজিমেন্ট’-এর সদস্য হন শিবা চৌহান। ২০২২ সালের জুলাই মাসে কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্যাপ্টেন শিবা সিয়াচেন ওয়ার মেমোরিয়াল থেকে ৫০৮ কিমি কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়াল পর্যন্ত সুরা সোই সাইক্লিং অভিযানে সফল ভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই সাফল্যের পর তাঁকে সুরা সোই ইঞ্জিনিয়ারদের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- শুধু বন্দে ভারতে নয়, এবার রাজধানী, শতাব্দী, এমনকী লোকাল ট্রেনেও থাকবে নজরদারি ক্যামেরা
শেষমেষ সিয়াচেনে তাঁর অভূতপূর্ব প্রদর্শনের কারণে তাঁকে সিয়াচেন ব্যাটল স্কুলে প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করা হয়েছিল। সেই প্রশিক্ষণের পরই শিবা সিয়াচেনে মোতায়েন হওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। আর এভাবেই তিনি দেশে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। তথ্য বলছে, গত ৪০ বছরে সিয়াচেনে কখনও কোনও মহিলা সেনা অফিসারকে মোতায়েন করা হয়নি। উল্লেখ্য, সিয়াচেন হিমবাহ হল পৃথিবীর সর্বোচ্চ এবং শীতলতম যুদ্ধক্ষেত্র। ১৯৮৪ সাল থেকে অনবরত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের সাক্ষী থেকেছে এটি। তাই ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সিয়াচেন হিমবাহে উপস্থিত থেকে ভারতীয় সেনারা দেশকে সুরক্ষা দিয়ে চলেছেন।