পঞ্জাবে আপে’র ‘মান’ রাখল মান, কে এই ভগবন্ত?

পঞ্জাবে আপে’র ‘মান’ রাখল মান, কে এই ভগবন্ত?

নয়াদিল্লি: পঞ্জাবে পালাবদল৷ ‘ঝাড়ু’ ঝড়ে বেসামাল কংগ্রেস৷ ‘হাত’ সরিয়ে ক্ষমতা দখল করল খড়গপুর আইআইটি’র প্রাক্তনীর দল৷ বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছিল পঞ্জাবে৷ সেটাই অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেল৷ পঞ্জাবজুড়ে দাপট দেখাল আপ৷ আর ধুরি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিজের নামে করলেন ভগবন্ত মান। ৫৮ হাজার ২০৬ ভোটে কংগ্রেসের দলবীর সিং গোল্ডিকে পরাজিত করেন তিনি৷ মানকে ‘ছোট ভাই’ সম্বোধন করে কেজরিওয়াল বলেন, ৯৩.৩ শতাংশ মানুষ তাঁকে বেছে নিয়েছেন৷ 

আরও পড়ুন- ঝড়ের গতিতে পঞ্জাবে উত্থান ‘আপ’-এর, সাফল্যের নেপথ্যে কী?

কে এই ভগবত সিং মান? 

১৯৭৩ সালে সাঙ্গুর জেলার সাতোজ গ্রামে জন্ম ভগবত সিং মানের৷ ২০১১ সালে মনপ্রিত সিং বাদলের পঞ্জাব পিপলস পার্টি’র হাত ধরে রাজনীতিতে অভিষেক তাঁর৷ ২০১৪ সালে আম আদমি পার্টির টিকিটে লোকসভা ভোটে জয়ী হয়ে সংসদে যান৷ শিরোমনি অকালি দলের বর্ষীয়ান নেতা সুখদেব সিং ধিন্দসাকে পরাজিত করার পর থেকেই পঞ্জাব রাজনীতিতে তাঁর গুরুত্ব বাড়তে থাকে৷ তিনি এককথায় পঞ্জাবীদের ঘরের লোক৷ তবে নেতা ছাড়াও তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে তাঁর৷ তিনি কৌতুক অভিনেতা৷ টিভি শো ‘জুগনু মাস্ত মাস্ত’ তাঁকে জনপ্রিয়তা এনে দেয়৷ এর পর একাধিক কমেডি শো’তে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে৷ রাজনীতিতে আসার আগে পঞ্জাবের মানুষ তাঁকে কমেডিয়ান রূপেই চিনতেন৷ 

অল্প বয়স থেকেই মানুষকে হাসানোর দক্ষতা গড়ে ওঠে তাঁর মধ্যে৷ সেই সময় অবশ্য ডিজিটাল মাধ্যমের রমরমা ছিল না৷ হাসির উপাদান খুঁজতে ইউটিউব বা ফেসবুকে উঁকি দিত না কেউ৷ তখন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হিসেবে উঠে এসেছিলেন ভগবন্ত মান। পঞ্জাবী ভাষায় একের পর এক কমেডি শো করেছিলেন তিনি৷ মিলেছিল খ্যাতিও৷ 

পঞ্জাবে মাঠেঘাটে, ট্রাক্টরে কান পাতলেই শোনা যেত মানের কমেডি৷ পঞ্জাবী ভাষায় কৌতুকের ছলেই রাজনীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় পৌঁছে দিতেন তিনি। রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে মজার কথা বলতেন৷ আজও বহু মানুষের প্রাণ খুলে হাসেন তাঁর কমেডি শুনে৷ একদা রাজনীতি নিয়ে মজা করা সেই মানুষটিই আজ বসতে চলেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে।

কলেজে পড়ার সময় কমেডি ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়ে দুটি স্বর্ণ পদক জিতেছিলেন ভগবন্ত মান। তবে কলেজের পাঠ তিনি শেষ করেননি। তাঁর আগেই মন দেন অভিনয়ে৷ অংশ নিয়েছিলেন ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জে’ও। শুধু দেশে নয়, কানাডা ও ব্রিটেনের মাটিতেও কমেডি শো করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি৷ অভিনয় করেছেন একটি জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ছবিতেও৷ 

পঞ্জাবে আপের যাত্রা শুরুর সঙ্গী মান৷ তাই দলের পুরনো সতীর্থের উপরেই ভরসা রেখেছিলেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ পঞ্জাবে আপে যোগ দেওয়ার আগেই শুরু তাঁর রাজনৈতিক জীবন। আম আদমি পার্টি যখন পঞ্জাবের রাজনীতিতে প্রবেশ করতে শুরু করে, তখন থেকেই কেজরিওয়ালের হাত ধরেন মান।