সিন্ধিয়া থেকে শিন্ডে, বিরোধীদের এই বিক্ষুব্ধ নেতারাই বিজেপির হারা বাজি জিতিয়েছেন

সিন্ধিয়া থেকে শিন্ডে, বিরোধীদের এই বিক্ষুব্ধ নেতারাই বিজেপির হারা বাজি জিতিয়েছেন

মুম্বই: বছর তিনেক আগের কথা, মধ্যপ্রদেশের সেই সময়ের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার চালেই সেই রাজ্যে দেখা দিয়েছিল বড়সড় রাজনৈতিক বিপর্যয়। নৈপথ্যে বিজেপির মদত। সিন্ধিয়ার সেই মোড় ঘোরানো চালই এবার চেলেছেন মহারাষ্ট্রের একনাথ শিন্ডে। আর শিন্ডের সেই জড়ানো চালেই কুপোকাত মহারাষ্ট্রের শিবসেনা তথা উদ্ধব ঠাকরে সরকার। কিন্তু, দেশ যখন দেখছে একনাথ শিন্ডের বিরোধিতা, রাজনীতিবিদদের একাংশ সেই বিরোধিতার মধ্যেই দেখতে পাচ্ছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাদের কাজে লাগানোর সেই চেনা ছক। এর আগে মধ্যপ্রদেশেও বিক্ষুব্ধ নেতাদের হোটেল রুমে রেখে এই একই মডেলের সফল রূপায়ণ ঘটিয়েছে বিজেপি বাহিনী। আর এবার লক্ষ্য মহারাষ্ট্র। মহারাষ্ট্রে শিন্ডেকে সামনে রেখেই এবার হারানো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছে পদ্ম শিবির। মুখে অবশ্য বিজেপি নেতারা বলছেন না সে কথা, কিন্তু এতদিনে তলে তলে সকলেই বুঝেছেন শিবসেনার ভিতরে চলা এই বিদ্রোহে আসল মদত কার রয়েছে।

বছরখানেক আগের কথা, ২০১৮ সালে মধ্যপ্রদেশে অল্পের জন্য ক্ষমতা দখলে ব্যর্থ হয়েছিল বিজেপি। নামমাত্র মার্জিনে সরকার গঠন করে কংগ্রেস। কিন্তু সেই সরকারকে কিভাবে সুকৌশলে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিজেপি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মত বিক্ষুব্ধ নেতাকে কাজে লাগিয়েছিল তা সকলেরই জানা। মধ্যপ্রদেশের সিন্ধিয়া সমর্থকদের দাবি ছিল সেই রাজ্যে কংগ্রেসের মুখরক্ষা করতে কমলনাথের কোনও ভূমিকা না থাকলেও রাজ্য এমনকি জাতীয় স্তরে ধীরে ধীরে কমলনাথের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি কমলনাথ তখন সামলাচ্ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বও। আর তাতেই ক্ষেপে ওঠেন  সিন্ধিয়া এবং তার সমর্থকরা। এই বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়েই ঠিক সময়ে চাল চেলে সিন্ধিয়া ও তার সমর্থক নেতা বিধায়কদের হোটেল বন্দি করে হারা বাজি জিতেছিল বিজেপি ব্রিগ্রেড। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং তার অনুগত নেতা-মন্ত্রীরা কমলনাথের তরফ থেকে সমর্থন তুলে নিতেই পতন হয় মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকারের এবং পুনরায় মধ্যপ্রদেশ দখল করে বিজেপি।

 মধ্যপ্রদেশের সেই চালই এবার মহারাষ্ট্র চালছে শিবসেনার আরও এক বিক্ষুব্ধ  নেতা  একনাথ শিন্ডে। অন্দরের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার বাসনা শিন্ডের বরাবর, তাছাড়াও দলের প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের কঠোর হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের বিপক্ষে গিয়ে কংগ্রেস এবং এনসিপি-র মতো দলের সঙ্গে জোট সরকার গঠন নিয়েও আপত্তি ছিল শিন্ডের মতো নেতার৷ মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের সঙ্গেও আবার বেশ মাখোমাখো সম্পর্ক শিন্ডের৷ কারণ ফড়ণবীশ সরকারেরও মন্ত্রী ছিলেন তিনি৷ সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়েই শিন্ডের মাধ্যমে শিবসেনা শিবিরে সিঁধ কেটেছে বিজেপি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 + ten =