মোদি সরকার নীতি ও পরিকল্পনা নির্ধারণে কারো সঙ্গে পরামর্শ করতে রাজি নয়। দ্বিতীয়বার মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই অভিযোগ তুলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত। সমাজ ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্ত দেশের বহু অভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরও একই মত। এবার কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন ম্যাগসেসে পুরষ্কারপ্রাপ্ত সংরক্ষণবাদী ও পরিবেশবিদ রাজেন্দ্র সিং। শনিবার রোটারি ইন্ডিয়া শতবর্ষ সম্মেলন ২০২০-তে যোগ দিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেছেন যে, দেশের প্রতিটি পরিবারের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করার কেন্দ্রের পরিকল্পনা 'অযৌক্তিক'।
কেন্দ্রীয় জল শক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত আগামী চার বছরে ভারতের সমস্ত পরিবারকে পানীয় জল সরবরাহ করার সরকারি পরিকল্পনা প্রসঙ্গে এই বিবৃতি দিয়েছেন রাজেন্দ্র সিং 'ওয়াটার ম্যান অফ ইন্ডিয়া'।
তিনি বলেন “আমাদের বাণিজ্যিক, আর্থিক এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রিকরণ ব্যবস্থার কারণে আপনি দেশের সকলকে (পরিবারকে) পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন না। এই পরিকল্পনা অবাস্তব এবং অসম্ভব,”।
রাজেন্দ্র সিং বলেন, সরকার একটি “চুক্তিভিত্তিক প্রকল্পে” প্রতিটি বাড়িতে জল সরবরাহ করতে পারে কারণ তার তহবিল রয়েছে, তবে দেশের জল সমস্যা সমাধানের জন্য যা প্রয়োজন তাহলো একটি সম্প্রদায়ভিত্তিক কেন্দ্র পরিচালিত জল পরিচালন কর্মসূচী ।
পরিবেশবিদ রাজেন্দ্র সিং ২০১৫ সালে 'স্টকহোম ওয়াটার প্রাইজ' জিতেছিলেন যে পুরস্কারটি জলের নোবেল পুরস্কার হিসাবে পরিচিত। তিনি বলেছেন, ভারতের প্রতিটি নাগরিকের জল ব্যবস্থাপনা এবং এর দক্ষ ব্যবহার বুঝতে হবে।
তাঁর কথায়, জল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। সমগ্র ভারতে জল স্বাক্ষরতার প্রয়োজন। জল সংরক্ষণের পাশাপাশি জলের ন্যূনতম সর্বোচ্চ ব্যবহার করাও শিখতে হবে দেশের মানুষকে। এবিষয়ে শুধু সরকার নয় সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে। উভয়কেই নিজস্ব ভূমিকা পালন করা উচিত।
অভিজ্ঞ এই পরিবেশবিদের মতে জল জীবনের একটি সাধারণ সম্পদ। যাঁর পর্যাপ্ত উৎস আমাদের নেই। উৎস সংরক্ষিত না হলে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় জল শক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেছেন, আগামী চার বছরে পাঁচগুণ বেশি কাজের লক্ষ্য রয়েছে এই প্রকল্পে দশ হাজার জলাশয় পুনর্নির্মাণ করা হবে।এর আগে গত বছরের জুনে তিনি বলেছিলেন যে কেন্দ্র ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।