নয়াদিল্লি: হু হু করে গলছে হিমালয়ের বরফ৷ এই গলনের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, গায়েব হয়ে যাচ্ছে একের পর এক হিমবাহ। গলনের এই গতি ভয় ধারাচ্ছে বিজ্ঞানীদের। এই সংক্রান্ত একাধিক সমীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিজ্ঞানীদের কপালে। তাঁদের দাবি, ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে হিমালয়ের বরফ যে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে গলেছে, তা পূর্ববর্তী দশকের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ, বরফ গলনের গতি এক দশকে ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কেন এই গলন? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে পাহাড় পর্বতে জমে থাকা বরফ গলে পড়বে৷ এর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। বরফ গলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যে বিষয়টি উদ্বেগের, তা হল গলনের গতি। এত দ্রুত হিমালয়ের গা থেকে এই বরফ গলে পড়বে, তা ভাবতে পারেননি কেউই। ফলে এখন থেকেই হুঁশিয়ার হতে হবে৷ পরামর্শ বিজ্ঞানীদের৷
এই গলনের ফলে প্রকৃতির উপর কতটা প্রভাব পড়বে? হিন্দুকুশ হিমালয়ের হিমবাহগুলির উপর সরাসরি নির্ভরশীল প্রায় ২৪ কোটি মানুষ৷ প্রতি দিনের তাঁদের প্রয়োজনীয় জলের ঘাটতি মেটে এই হিমবাহগুলি থেকে। পরোক্ষ ভাবেও বহু মানুষ নির্ভরশীল৷ বিভিন্ন নদী উপত্যকায় বসবাসকারী আরও অন্তত ১৬৫ কোটি মানুষ হিমবাহগুলির উপর পরোক্ষ ভাবে নির্ভর করে থাকে৷ সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ দেখে বিজ্ঞানীদের অভিমত, এই শতাব্দীর শেষেই হিমালয়ের হিমবাহগুলি ৮০ শতাংশ আয়তন হারাবে। এর ফলে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে ওই এলাকা থেকে উৎপন্ন অন্তত ১০টি প্রধান নদী এবং তাদের যাবতীয় উপনদী ও শাখানদী।
গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র, মেকং, ইয়েলো, ইরাবতীর মতো ভারত ও চিনের বহু গুরুত্বপূর্ণ নদীর উৎস হিমালয়ের এই সব হিমবাহ। ফলে হিমবাহগুলি গলে গেলে এই নদীগুলিতে প্লাবনের সৃষ্টি হবে৷ নদীর উপত্যকায় বসবাসকারী মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠবে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>