নয়াদিল্লি: কাশ্মীরের পহেলগাঁও-এ ভয়াবহ জঙ্গি হানায় নিহত ভারতীয় নৌসেনা অফিসার লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের স্ত্রীর পাশে দাঁড়াল জাতীয় মহিলা কমিশন (NCW)। স্বামীর মৃত্যুর পরে ‘ঘৃণা নয়, চাই শান্তি’— এই বার্তা দিয়ে হিমাংশি নারওয়াল যখন সংযম ও মানবতার নজির গড়েছেন, তখন সেই বক্তব্যের জন্য তাঁকেই সামাজিক মাধ্যমে ট্রোল করা শুরু হয়। এই ট্রোলিংকে “চরম নিন্দনীয়” বলে আখ্যা দিয়েছে কমিশন।
চরম বিভীষিকা
মাত্র এক সপ্তাহ আগে বিয়ে হয়েছিল বিনয় ও হিমাংশির। নতুন জীবনের শুরুতে তাঁরা মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন কাশ্মীরে৷ সেদিন বৈসরনে সুন্দর সময় কাটাচ্ছিলেন দু’জনে। আর সেখানেই ঘটে চরম বিভীষিকার ঘটনা—২২ এপ্রিল, সন্ত্রাসবাদীরা বিনয়কে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। মৃত্যু হয় আরও ২৫ জনের।
বৃহস্পতিবার, স্বামীর মৃত্যুর পর প্রথমবার মুখ খোলেন হিমাংশি। চোখের জলে ভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমি শুধু চাই, গোটা দেশ ওঁর (বিনয়) জন্য প্রার্থনা করুক। তিনি যেন শান্তিতে থাকেন। আর একটা জিনিস—ঘৃণা নয়। আমি দেখছি কিছু মানুষ মুসলিম বা কাশ্মীরিদের দিকে ঘৃণা করছেন। এটা আমরা চাই না। আমরা চাই অপরাধীর শান্তি এবং শুধুই শান্তি।”
বিদ্বেষমূলক আক্রমণ Himanshi Narwal Trolling
এই বক্তব্যের পরেই শুরু হয় বিদ্বেষমূলক আক্রমণ। সোশ্যাল মিডিয়া ইউজারদের একাংশ হিমাংশিকে লক্ষ্য করে অশালীন মন্তব্য করতে শুরু করেন। এই প্রেক্ষিতে জাতীয় মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়—
“লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের মৃত্যুর পর, তাঁর স্ত্রী হিমাংশি নারওয়াল যেভাবে ট্রোলের শিকার হচ্ছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয়। একজন মহিলার মতাদর্শ, ব্যক্তিগত বিশ্বাস বা আবেগের জন্য তাঁকে এভাবে আক্রমণ করা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়।”
কমিশনের বার্তা
কমিশনের আরও বার্তা, “মতামত প্রকাশ করা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। কিন্তু তা হওয়া উচিত সংবিধান সম্মত ও শালীনতার সীমার মধ্যে। জাতীয় মহিলা কমিশন দেশের প্রতিটি নারীর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বিনয়ের মৃত্যুকে ‘জাতীয় ক্ষতি’ বলে বর্ণনা করে কমিশন জানায়, “জঙ্গিরা তাঁকে ধর্ম জিজ্ঞেস করে গুলি করে হত্যা করে। এই বর্বর ঘটনায় গোটা দেশ মর্মাহত, ক্ষুব্ধ।” যখন একাধিক কণ্ঠ প্রতিহিংসার পথে হাঁটছে, তখন এক তরুণীর শান্তির আবেদন এক নতুন বার্তা দেয়—বেদনার ভিতরেও মানবতা এখনও বেঁচে আছে।
National: NCW stands with Himanshi Narwal, wife of slain navy officer in Pahalgaon attack, after she urged for peace, not hate, and faced online trolling. Commission condemns the “reprehensible” trolling.