করোনাকালে একটানা প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে লকডাউন। বন্ধ হয়েছে স্কুল পাঠশালা, অফিসের দরজা বন্ধ হয়ে বাড়িতে বসেই চালাতে হয়েছে যাবতীয় কাজকর্ম। এদিকে পর্যটন, সিনেমা হল, রেস্তোরা, ক্যাফে সবকিছুই হয় বন্ধ, নয়তো সেখানেও বিদ্যমান একগুচ্ছ বিধিনিষেধ। এমতাবস্তায় ঘরবন্দী জীবনে লাগামছাড়াহারে বেড়েছে যৌনতা, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অসুরক্ষিত। আর তার হাত ধরেই ফেরত এসেছে HIV-এর মত সাংঘাতিক সমস্ত রোগ। সম্প্রতি একটি আরটিআই রিপোর্টে সামনে এসেছে, দেশে এই দেড়বছরে লকডাউন চলাকালীন HIVতে আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৮৫ হাজার জন। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা চন্দ্রশেখর গৌর একটি আরটিআই করে লকডাউন পরবর্তী এইচআইভি আক্রান্তদের তালিকা জানতে চান। সেই তালিকা সামনে আসতেই রীতিমতো আঁতকে উঠেছে চিকিৎসক মহল। জানা গিয়েছে ২০২০-২১ সালের লকডাউনের সময় অসুরক্ষিত যৌন মিলনের জন্য ৮৫ হাজার মানুষ এই মরণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রথম স্থানে রয়েছে যে রাজ্য তা হল মহারাষ্ট্র। শুধুমাত্র মারাঠি ভূমিতেই ১০ হাজার ৪৯৮ জন এই ভাইরাসের শিকার হয়েছেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধপ্রদেশ এবং তৃতীয়তে কর্ণাটক। দক্ষিণের এই দুই রাজ্যে গত দেড় বছরে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৯৫২১ এবং ৮৯৪৭।
তবে এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই দেশের বাকি রাজ্যগুলোও। জানা যাচ্ছে সংক্রমণ তালিকায় আশঙ্কাজনক জায়গায় রয়েছে উত্তর প্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং বিহারও। এই তিন রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৬৯০৫, ৬৫০৫ এবং ৫৪৬২। এছাড়াও গুজরাট, তামিলনাড়ু এবং রাজস্থানেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
এর সঙ্গেই জানা গিয়েছে, এই লকডাউন চলাকালীন দেশে এমন ৩০০টি শিশু জন্ম নিয়েছে যারা মায়ের থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রেও শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটক। এছাড়াও ওড়িশা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, তেলেঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারেও বেশকিছু শিশু এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়ে জন্ম নিয়েছে বলে খবর। দেখে নেওয়া যাক রাজ্য ভিত্তিক সেই সংখ্যাগুলি। ওই ৩০০ টি শিশুর মধ্যে মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটকে জন্ম নিয়েছে ৩১টি করে শিশু। এরপরেই রয়েছে ওডিশা-২৪ টি কেস, রাজস্থান ২২টি কেস, উত্তরপ্রদেশ ২১টি কেস, মধ্যপ্রদেশ ২০টি, গুজরাট ও তেলেঙ্গানা যথাক্রমে ১৮টি করে ঘটনা, পশ্চিমবঙ্গ ১৩টি ঘটনা এবং বিহারে ১০টি ঘটনা।