রোজগার ৮ লক্ষের কম হলেই সংরক্ষণ, অথচ আড়াই লক্ষে আয়কর! মামলা দায়ের হল আদালতে

রোজগার ৮ লক্ষের কম হলেই সংরক্ষণ, অথচ আড়াই লক্ষে আয়কর! মামলা দায়ের হল আদালতে

নিজস্ব প্রতিনিধি:  আয়কর দেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হোক। এই দাবি বহুদিন ধরেই রয়েছে মধ্যবিত্তের। এবার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি আইনের ভিত্তিতে নতুন করে এই দাবি তুলেছেন জনৈক ব্যক্তি। উল্লেখ্য বার্ষিক আট লক্ষ যে পরিবারের আয় সেই পরিবারকে আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণির আওতায় সংরক্ষণ দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে‌ সিলমোহর দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ‌ কিন্তু সংরক্ষণের আওতায় এলেও তাঁদের আয়কর দিতে হবে কেন? এই প্রশ্ন তুলে মাদ্রাজ হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। এবার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জবাব করল মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ। মামলাকারীর আবেদন গ্রহণ করেছে আদালত। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক, অর্থ মন্ত্রক এবং জনস্বার্থ বিভাগের কাছ থেকে হলফনামা চেয়েছে হাইকোর্ট।

আর্থিকভাবে দুর্বল ও সংরক্ষিত শ্রেণির উচ্চশিক্ষা এবং সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে দশ শতাংশ সংরক্ষণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে গত ৭ নভেম্বর সিলমোহর দিয়েছে শীর্ষ  আদালত। সেই রায় ঐতিহাসিক বলে মনে করে গোটা দেশ। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এই আইন আনে কেন্দ্র। পরবর্তীকালে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে গড়ায়। দীর্ঘ দিন ধরে শুনানির পর অবশেষে দেশের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষের সমাধিকারের স্বার্থে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এরপরই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

কুন্নুর সুনিবাসন নামে এক ব্যক্তি বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি আর্জি পেশ করেছেন। তাতে বলেছেন, যেখানে বছরে ৮ লক্ষের কম রোজগার করা ব্যক্তিরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকার তকমা পাচ্ছেন, তাহলে আয়করের উর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে আট লক্ষ কেন করা হবে না? উল্লেখ্য বর্তমান আইন অনুযায়ী কারও বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ টাকার বেশি হলেই তাঁকে করের আওতায় আনা হয়। তবে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড় দেয় আয়কর দফতর। সেই যুক্তিতেই মামলা দায়ের করেছেন তিনি। আর্থিক অনগ্রসর শ্রেণি বলতে বার্ষিক যে আয়ের কথা আইনে বলা হয়েছে তাতে তখনই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। একটি পরিবারের বার্ষিক আয় আট লক্ষের কম হলেই চলবে। অর্থাৎ প্রতি মাসে আয় ৬৬ হাজার ৬৬৬ টাকার কম হলেই সেই পরিবার আর্থিক অনগ্রসর শ্রেণির আওতায় চলে আসবেন। কিন্তু ঘটনা হল এই পরিমাণ টাকা খুব কম লোকই দেশে রোজগার করে থাকেন। স্বাভাবিকভাবেই এই রোজগার যে পরিবারের রয়েছে তাদের আদৌ আর্থিক অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় আনা যায় কিনা তা নিয়ে বিতর্ক থাকছেই। আর সেই জায়গা থেকেই আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ওই ব্যক্তি। আবেদন করেছেন তাহলে এবার বাড়িয়ে দেওয়া হোক আয়করের ঊর্ধ্বসীমাও। এই পরিস্থিতিতে মামলাটি গ্রহণ করেছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। বিষয়টি নিয়ে এবার কেন্দ্র কি জবাব দেয় সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − eight =