বেহাল দশা সরকারি হাসপাতালের, তিন দিনের শিশুকে খুবলে খেল ইঁদুর

বেহাল দশা সরকারি হাসপাতালের, তিন দিনের শিশুকে খুবলে খেল ইঁদুর

ঝাড়খন্ড: জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে গত ২ মে গিরিডি সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল তিনদিনের সদ্যোজাত একটি শিশুকন্যা। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে সঙ্গে সঙ্গে ওই সরকারি হাসপাতালের নিওন্যাটাল ওয়ার্ডে ভর্তি করে। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু হঠাৎ বুধবার রাতে ওই শিশুটিকে যখন দেখতে যান তার মা তখন তিনি দেখতে পান শিশুটির হাটুতে গভীর ক্ষত, সেখান থেকে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। ঘটনাটি চোখে পড়তেই রীতিমতো শিউরে ওঠেন মহিলা। সঙ্গে সঙ্গে ডেকে আনেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সদের। বিষয়টি পাঁচ কান হতে জানা যায়, ওই ওয়ার্ডে নাকি গেছো ইঁদুরের খুবই উপদ্রব। আর সেই ইঁদুরেই খুবলে খেয়েছে সদ্যোজাতের হাটু। সম্প্রতি ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের গিরিডি সদর হাসপাতালে। আর এই ঘটনাই আরও একবার প্রমাণ করেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার যতই সরকারি হাসপাতালে পরিষেবার সুনাম করুন না কেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা এখনও সেই তলানিতে পড়ে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হতে দেশজুড়ে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কিভাবে শিশুদের ওয়ার্ডে ইঁদুরের উপদ্রব হতে পারে তাই নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। সেইসঙ্গে এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে, যখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় কোনও সদ্যোজাত শিশুকে নিওন্যাটাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তখন তাদের তো আরও বেশি নজরদারির প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ওই ওয়ার্ডের নার্সরা আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার পরিবর্তে কিভাবে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করলেন। অন্যদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটির অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। এই মুহূর্তে ওই হাসপাতালের আইসিইউতেই ভর্তি রয়েছে সে। সেইসঙ্গে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ওই হাসপাতালের দুজন নার্সকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে খবর। বিষয়টির একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতালে উর্দ্ধতন কর্তারা।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে পেডিয়াট্রিক বিভাগের প্রধান অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন, গত ২ মে শিশুটি জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নিওনেটাল ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। এর ঠিক দুই দিন পরেই দেখা যায় তিনদিনের ওই শিশুকন্যার হাঁটুতে একটি গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে বিষয়টি দেখছেন হাসপাতালেরই আরও একজন সার্জেন। তবে ডাক্তার অবিনাশ কুমার ইঁদুরের কামড়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিশুটির ক্ষতস্থান দেখে এখন স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছেনা ইদুরের কামড়ের ফলেই ওই ক্ষত তৈরি হয়েছে কিনা। তবে বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ। তদন্তের রিপোর্টে সবটা স্পষ্ট হবে।’ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 16 =