কলকাতা: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার তদন্ত শেষ করতে আরও কটা দিন সময় লাগবে বলে জানিয়ে দিল রেল। সোমবার রেলের তদন্তকারী দলের প্রধান রেল সুরক্ষা কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব সার্কল) এএম চৌধুরী জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে। তাই আরও কয়েকটা দিন সময় লাগবে। যদিও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোব রবিবার জানিয়েছিলেন, বালেশ্বরের দুর্ঘটনা নিয়ে শীঘ্রই রিপোর্ট প্রকাশ করবেন রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিশনার (সিআরএস)। তবে, সোমবার এএম চৌধুরী খড়্গপুরে জানিয়েছেন, “সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। ইতিমধ্যেই ৫-৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁরা সকলেই ট্রেনের কর্মী ও চালক। গ্রামবাসীদের সাক্ষ্য এখনও নেওয়া হয়নি। কেউ সাক্ষ্য দিতে চাইলে তা গ্রহণ করা হবে। তবে ২-৩ জনকে জিজ্ঞাসা করলেই হবে না। আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে।’’
অর্থাৎ এখনই যে রিপোর্ট সামনে আসছে না সেটা স্পষ্ট করেছেন তিনি। তাই রেলমন্ত্রী রবিবার যে কথা বলেছেন তার সঙ্গে রেলের এদিনের বক্তব্য মিলছে না। রবিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে রেলমন্ত্রী বলেছিলেন, “রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিশনার (সিআরএস) শনিবার দুর্ঘটনাস্থলে ছিলেন। সিআরএস সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দ্রুত তদন্ত এগিয়েছেন। দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে।’’ এর পরই তিনি বলেন, ‘‘এই কাজ যাঁরা ঘটিয়েছেন তাঁদেরও চিহ্নিত করে ফেলা হয়েছে। এই দুর্ঘটনার কারণ খুব শীঘ্রই জানা যাবে।”
সেই সঙ্গে জানিয়েছেন দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার এএম চৌধুরী বলেছেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে সিগন্যাল, ইন্টারলকিং সিস্টেম, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখনই তিনি কিছু বলতে নারাজ।তদন্ত শেষ হলে রেল বোর্ডকে রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে দুর্ঘটনা নিয়ে সিবিআই পৃথকভাবে তদন্ত করলে তাতে অসুবিধার কিছু দেখছেন না রেলকর্তা এএম চৌধুরী।
কিন্তু রেলের পরস্পর বিরোধী বক্তব্যে উঠছে প্রশ্ন। রবিবার রেলমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমে যা বলেছিলেন তাতে বালেশ্বরের দুর্ঘটনায় নাশকতার ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সিবিআই তদন্তের কথাও জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “যা কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে সব মাথায় রেখেই এই দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে রেলওয়ে বোর্ড।”
এই পরিস্থিতিতে একদিকে রেলের নিজস্ব তদন্ত, অন্যদিকে পৃথকভাবে তদন্ত করবে সিবিআই। আর জোড়া তদন্তের রিপোর্ট যদি আলাদা হয় সেক্ষেত্রে কি সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র? এই প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে কোন রিপোর্টটিকে ঠিক বলে ধরে নেওয়া হবে? তবে দুটি রিপোর্ট যদি এক হয় সেক্ষেত্রে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তাই বালেশ্বরের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে দুটি রিপোর্ট আসার পর কি জানা যায় এখন সেটাই দেখার।