কন্নড়: মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাটের পর এবার দক্ষিণের রাজ্য কর্নাটকেও রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ব্যাপক বৃষ্টিপাত। অতিভারী বৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যে এই রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যেই গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কর্নাটকের কন্নড় জেলার পার্বত্য এলাকায় নামে ভয়াবহ ধস। ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে এই ধসে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৬ জন। তার মধ্যে রয়েছে দুটি শিশুও। মৃতদেহ গুলি উদ্ধারে মঙ্গলবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। আর তখনই ধ্বংসস্তূপ সরাতেই মিলেছে ছোট্ট ওই দুই বোনের মৃতদেহ যারা জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধরে রেখেছে একে অপরের হাত। ছোট্ট ওই দুই শিশুর এমন মর্মান্তিক পরিণতি দেখে চোখে জল উদ্ধারকারীদেরও।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাত থেকেই কর্নাটকের উত্তর কন্নড় এবং দক্ষিণ কন্নড়ে শুরু হয়েছে তুমুল বৃষ্টিপাত। সেই বৃষ্টির তীব্রতা মঙ্গলবার থেকে আরো বৃদ্ধি পায় এবং ওইদিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে দক্ষিণ কন্নড়ের সুব্রমানিয়া এলাকা। ১১ বছর বয়সী শ্রুতি এবং তার বোন ৬ বছরের জ্ঞানশ্রী ওই এলাকারই বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতের ধসে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারিয়েছে এই দুই শিশু। জানা যাচ্ছে, যে সময় ওই বাড়ির উপরে পাহাড়ের অংশ ভেঙে পড়ে তখন ঘরের ভিতরেই ছিল তারা। বুধবার ভোরে ধস সরিয়ে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে দেখা যায় দুই বোন হাত ধরাধরি করে রয়েছে অথচ তাদের দেহে প্রাণ নেই।
মৃত ওই দুই শিশুকন্যার মা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যখন ধ্বস নামে সেই সময় বাড়ির বারান্দায় বসে বই পড়ছিল শ্রুতি। হঠাৎ হুরমুড় করে আওয়াজ হওয়ায় সে ভয় পেয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে যায়। তাকে দেখে তার বোনও ছুটে যায় দিদির সঙ্গে। এরপরেই বাড়ির উপর ভেঙ্গে পড়ে বিশাল বিশাল পাথরের চাই। সেই সময় তাদের মা ছিলেন রান্নাঘরে। আওয়াজ শুনে তিনিও বেরিয়ে আসেন এবং মেয়েদের খুঁজতে গিয়ে দেখেন বাড়ির উপর ধ্বস নেমেছে। এরপর বহু কষ্টে বুধবার সকালে উদ্ধার হয় ওই দুই বোনের নিথর দেহ এবং তখনই দেখা যায় দেহে প্রাণ না থাকলেও দুজনে একে অপরের হাত ধরে রয়েছে।
