‘বিতর্কিত’ কিরেন রিজিজুকে আইনমন্ত্রীর পদ থেকে সরালেন মোদী! কেন এই পদক্ষেপ?

‘বিতর্কিত’ কিরেন রিজিজুকে আইনমন্ত্রীর পদ থেকে সরালেন মোদী! কেন এই পদক্ষেপ?

নয়াদিল্লি: আইন মন্ত্রীর পদ থেকে কিরেন রিজুজুকে সরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আইন মন্ত্রক থেকে পাঠালেন ভূ বিজ্ঞান মন্ত্রকে। এক ধাক্কায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় গুরুত্ব কমল কিরেন রিজিজুর৷ কেন এই পদক্ষেপ? 

অতীতে নজর রাখলে স্পষ্ট বোঝা যায়, আইনমন্ত্রী হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে ধারাবাহিক সংঘাতে জড়িয়েছিলেন কিরেন রিজুজু। বিচারপতি নিয়োগে ‘কলেজিয়াম ব্যবস্থার স্বচ্ছতা’ থেকে সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি সংক্রান্ত মামলায় ‘সুপ্রিম কোর্টের অধিকার’— বারবার বিচার বিভাগের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন তিনি। এর জন্য সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখেও পড়েছেন! ক্রমে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসা সেই কিরেন রিজিজুকে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

এমন নয় যে যাবতীয় সিদ্ধান্ত কিরেনের একার ছিল। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর কৌশল ছিল শাসকদলেরই। কিন্তু, কিরেন ছিলেন প্রধান মুখ। অনেকেই মনে করেন, সেই সংঘাতের পর কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থান নিয়ে চলছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক কিছু পর্যবেক্ষণ ও রায়ে তাঁর প্রতিফলন মিলেছে। এমনকি দু’দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের উদ্দেশে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইডি যেন ভয়ের বাতাবরণ তৈরি না করে৷ অনেকের মতে, কিরেন রিজুজুকে আইন মন্ত্রক থেকে সরিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী৷ তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হল তুলনায় নরমপন্থী অর্জুন রাম মেঘওয়ালকে।

আইন মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে রাজস্থানের এই বিজেপি সাংসদকে৷ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে দফতর বদল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। দলের অন্দরে কানাঘুষো, বার বার প্রকাশ্যে অনাকাঙ্খিত মন্তব্য করে সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন রিজিজু৷ বিচার বিভাগের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন। সে কারণেই লোকসভা ভোটের আগে তাঁকে সরিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে ‘ইতিবাচক বার্তা’ দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ 

সম্প্রতি একটি আলোচনা সভায় বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন রিজিজু৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের বেশ কয়েক জন ‘ভারতবিরোধী গোষ্ঠী’র সদস্য! ওই গোষ্ঠীর কাজ বিচার বিভাগকে সরকারের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করা!’’ ওই মন্তব্যের জেরে সংসদে সাফাইও দিতে হয়েছিল রিজিজুকে। তার আগে বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়াম ব্যবস্থায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনাও শুনতে হয়েছিল প্রাক্তন আইনমন্ত্রীকে৷