নিজস্ব প্রতিনিধি: দেড় বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। বর্তমানে যুদ্ধের তীব্রতা কিছুটা কমলেও তা বন্ধ হয়নি। দু’দেশের সেনা এবং সাধারণ মানুষ মিলিয়ে যে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা কারও জানা নেই। বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে। তখন যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তির বার্তা দিয়েছেন মোদি। কিন্তু ভারসাম্য বজায় রাখতে সরাসরি কোনও পক্ষ নেননি তিনি। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এভাবে ভারসাম্য রক্ষা ভারত বহুদিন ধরেই করে আসছে। এটাই নয়াদিল্লির অবস্থান।
লক্ষ্য একটাই, কাউকে না চটানো। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ইজরায়েলের সঙ্গে হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরাসরি ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়ানোর স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। নেতানিয়াহু ফোন করেছিলেন মোদিকে। তখনই পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন মোদি। প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। উল্লেখ্য হামাস একটি প্যালেস্টাইন যোদ্ধা গোষ্ঠী, যাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা এবং ইজরায়েল, গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-সহ বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। তবে কী সেই কারণেই ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে ধর্মীয় মেরুকরণের বার্তা স্পষ্ট করলেন মোদি? যথারীতি ওয়াকিবহাল মহলে এমন চর্চা শুরু হয়েছে। তাই ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যে ভারসাম্যের কূটনীতি বজায় রেখে চলেছেন মোদি, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ক্ষেত্রে তার উল্টো পথে তিনি সুচিন্তিত ভাবেই হেঁটেছেন।
ছ’মাসের মধ্যে লোকসভা নির্বাচন হবে। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে। সেই আবেগ ভোট প্রচারে যে ব্যবহার করবে বিজেপি, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তার আগে রয়েছে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। যেখানে বিজেপিকে কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করে। সেই জায়গায় ইজরায়েলের পাশে থেকে বিজেপি যে ধর্মীয় মেরুকরণের বার্তা দিতে চাইছে তা স্পষ্ট। তাই রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন ভোটবাক্সে ফায়দা তুলতেই নয়াদিল্লির এই অবস্থান। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস কেন মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ নিয়ে সেভাবে মুখ খুলছে না তা নিয়েও আসরে নেমেছে বিজেপি। সবমিলিয়ে ইজরায়েলের পাশে যেভাবে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তা অনেক জল্পনাই উস্কে দিল।