নয়াদিল্লিঃ একদিকে চলছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এর মাঝেই শুরু হল এই বছরের বাদল অধিবেশন। ১৮ জুলাই অর্থাৎ আজ সোমবার থেকে শুরু হতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন। সংসদ ভবন সূত্রে খবর, প্রায় একমাসব্যাপী অধিবেশনে প্রায় ২৪টি নতুন বিল পেশ করা হতে পারে। বলে রাখা ভালো এবারের অধিবেশন প্রথম থেকেই উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ একদিকে যেমন বিরোধীদের ঝাঁঝ কমাতে সম্প্রতি সংসদ ভবনে একগুচ্ছ নতুন ফরমান জারি হয়েছে, অন্যদিকে সরকারকে প্যাঁচে ফেলতে বিরোধীরাও নিজেদের অস্ত্রে শাণ দিচ্ছেন। সবে মিলে টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এবারের বাদল অধিবেশন।
জানা যাচ্ছে আজ অর্থাৎ ১৮ জুলাই থেকে শুরু হয়ে এই অধিবেশন চলবে আগামী ১২ অগস্ট পর্যন্ত। সূত্রের খবর, এবারের এই অধিবেশনে ক্যান্টনমেন্ট বিল, মাল্টি-স্টেট কো-অপারেটিভ সোসাইটি বিলসহ মোট ২৪টি নতুন বিল নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এছাড়া সংসদে ছত্তিশগড় এবং তামিলনাড়ুর জন্য তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতি তালিকা সংশোধন বিলও উত্থাপন করা হতে পারে বলে খবর। এই সঙ্গেই জানা যাচ্ছে যে নতুন ২৪টি বিল পেশ করা হতে চলেছে সেই তালিকায় আছে কফি (প্রমোশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট), দ্য ডেভলপমেন্ট অফ এন্টারপ্রাইজেস অ্যান্ড সার্ভিসেস হাবস, জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেসন অফ গুডস (নিবন্ধন) সংশধোনের মতো বিলগুলি। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে সুরক্ষা (সংশোধন), গুদামজাতকরণ(উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) এবং প্রতিযোগিতা (সংশোধন) বিল।
অন্যদিকে সংসদের গতবারের অধিবেশন অর্থাৎ শীতকালীন অধিবেশন এক রাশ অশান্তির আবহে শেষ হওয়ায় পেশ করা হয়েছিল, কিন্তু আলোচনা হয়নি এমন আটটি বিল রয়েছে যা এবারের এই বাদল অধিবেশনে পুনরায় পেশ করা হবে বলে খবর। আজ থেকে শুরু হতে চলা বাদল অধিবেশন নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রথম দিনটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েই কাটবে। কেননা, সোমবার অর্থাৎ অধিবেশনের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এতে অংশ নেবেন দুই কক্ষের সাংসদরা। ভোটের ফলপ্রকাশ আগামী ২১ জুলাই। এছাড়া বাদল অধিবেশন চলাকালীন ভেঙ্কাইয়া নায়ডু পরবর্তী দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও বেছে নেবেন সাংসদরা। সেক্ষেত্রে ৬ অগস্ট উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন হতে পারে।
বাদল অধিবেশনের দিনগুলিতে সভার কাজ সুষ্ঠভাবে যাতে পরিচলনা করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরকার-বিরোধী উভয় পক্ষের কাছে আবেদন করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। কিন্তু অগ্নিপথ, মুদ্রাস্ফিতির মতো একাধিক ইস্যুতে বিরোধীরা যে সংসদে সুর চড়াবে, তার ইঙ্গিত আগেভাগেই মিলেছে। এছাড়া নূপুর শর্মা বিতর্ক, লোকসভা সচিবালয় থেকে প্রকাশিত অসংসদীয় ভাষার তালিকা, সংসদ চত্ত্বরে ধর্না, বিক্ষোভের মতো কর্মসূচির উপর সেন্সর নিয়েও এই মুহূর্তে কার্যত উত্তাল বিরোধী শিবির। এছা্ড়া এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, টাকার পতন, সীমান্ত সমস্যা, জ্বালানি জ্বালা এবং পরিশেষে শ্রীলঙ্কা ইস্যু এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে সরকারকে প্যাঁচে ফেলার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন বিরোধীরা। তবে বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনের সূত্রপাত কেমন হয় এখন সেটাই দেখার।
