‘ভিক্ষা করতে চাই না’, রাস্তায় ঘুরে আজও কলম বিক্রি করেন অশীতিপর বৃদ্ধা

‘ভিক্ষা করতে চাই না’, রাস্তায় ঘুরে আজও কলম বিক্রি করেন অশীতিপর বৃদ্ধা

পুণে: বয়সের ভারে ন্যূব্জ শরীর৷ কিন্তু এখনও সোজা ‘মেরুদণ্ড’৷ কোনও পরিস্থিতিতেই বিকয়নি তাঁর আত্মসম্মানবোধ,মর্যাদা৷ তাই তো আজও একগাল হাসি নিয়ে  রাস্তায় রাস্তায় কলম বিক্রি করেন অশীতিপর বৃদ্ধা৷ শরীর অশক্ত তাঁর৷ কিন্তু মনে ক্লান্তি নেই একফোঁটাও৷ পুণের এমজি রোডে গেলেই দেখা মিলবে তাঁর৷ 

আরও পড়ুন- আস্ত বাড়ি গেল ভেসে! বন্যা বিধ্বস্ত কেরলের ভয়াবহ অবস্থা

অশীতিপর এই বৃদ্ধার নাম রতন৷ দাঁত বিহীন একগাল হাসি নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়ান এমজি রোডের রাস্তায়৷ হাতে পেনের বাক্স, সাদা ঢাকনার গায়ে ইংরেজি হরফে স্পষ্ট করে লেখা, ‘আমি ভিক্ষা করতে চাই না৷ দয়া করে ১০ টাকা দিয়ে নীল পেন কিনুন৷’ তার নীচে লেখা ‘ধন্যবাদ৷ আমার আশীর্বাদ রইল৷’ সকাল থেকে সন্ধে এই বাক্স হাতে নিয়েই এমজি রোডে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত হেঁটে বেড়ান রতন৷ আগ্রহীদের দেখলে এক গাল হেসে দাঁড়ান। তবে কখনই কাউকে কলম কেনার জন্য অনুরোধ করেন না তিনি৷ জোড়াজুড়ি তো নয়ই৷

রতনের এই গুণে অনুপ্রাণিত হন এক মহিলা উদ্যোগপতি। তাঁর মতন একজন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষকে দেখে মুগ্ধ হন তিনি৷ তিনি মনে করেন রতনের মতো মানুষই বাস্তবের ‘নায়ক’৷ তাই আর দেরি না করে চটপট রতনের সঙ্গে ভাব জমান তিনি৷ এর পর সেই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা নিজের ইনস্টাগ্রামে সবিস্তার পোস্ট করেন৷ সেই সঙ্গে তাঁর হাসিমুখের একখানি ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি৷ অশিতীপর বৃদ্ধাকে নিয়ে তাঁর ওই পোস্ট নজর কাড়ে নেটিজেনদের৷  

ওই মহিলা উদ্যোগপতির নাম শিখা রাঠি। তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আজ বাস্তবের এক নায়ক এবং সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে দেখা হল আমার- রতন।’ তিনি বলেন,  ‘আমার এক বন্ধু ওঁর কলমের বাক্সের উপর লেখাটি দেখার পরই একটি কলম কিনেছিল। তবে যে বিষয়টি সবথেকে বেশি নজর কেড়েছিল, সেটা হল রতন আর কোনও কলম কেনার জন্য জোর করেননি। বরং তাঁর চোখে মুখে ছিল অদ্ভুত এক তৃপ্তির হাসি৷ রতনের এই নির্লোভ, সৎ এবং আত্মমর্যাদাবোধই আমাকে মুগ্ধ করেছে।’ সেদিন অবশ্য রতনের থেকে আরও অনেকগুলি কলম কিনে নিয়েছিলেন শিখা।

রতনকে নিয়ে  ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুভূতি শেয়ার করতে গিয়ে শিখা আরও লেখেন, ‘আমার মনে হল, এমন একজন মানুষের গুণগান না করলে হয় না৷ তাই এই পোস্ট। আপনারা যদি কখনও এমজি রোডে যান, রতনের সঙ্গে দেখা হলে দয়া করে ওঁর থেকে কলম কিনবেন। এতে রতনের তো তো ভাল লাগবেই৷ সেইসঙ্গে  আমি নিশ্চিত যে আপনাদেরও ভাল লাগবে।’ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − five =