পুরী: করোনার দাপটে পরপর দু’বছর স্থগিত থাকার পর ফের ব্যাপক ভক্তকুলের উপস্থিতিতে ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে পুরীর রথযাত্রা। শুক্রবার সকাল থেকেই মহাসমারোহ এবং বিপুল জনজোয়ারের মধ্যেই গড়াল রথের চাকা। ২০২০ সালে দেশজুড়ে করোনার সংক্রমণ আছড়ে পড়ায় সেই বছর থেকেই পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রায় আমজনতার প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল রথযাত্রা কমিটি। সেই ধারা বজায় ছিল ২০২১ সালেও। কিন্তু চলতি বছরে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রিত থাকায় দেশ এবং বিদেশের বহু ভক্তকুলের উপস্থিতিতে পালিত হচ্ছে এই বিখ্যাত রথযাত্রার উৎসব। তবে কয়েক লক্ষ ভক্তকূলে নিরাপত্তার পাশাপাশি এই ব্যাপক ভিড়কে কেন্দ্র করে যাতে দেশের করোনা পরিস্থিতির আর অবনতি না হয় তার জন্য বেশ কিছু নিয়ম জারি করেছে ওড়িশা সরকার। রথযাত্রার অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলক হয়েছে মাস্ক। এছাড়া দেশ বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীরা করোনা টিকা নিয়েছেন কিনা সেই বিষয়েও প্রশাসনের কড়া নজর রয়েছে।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা দেখতে বৃহস্পতিবার রাতে পুরী পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ এবং শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। পাশাপাশি এদিন সকালেই টুইটবার্তায় দেশবাসীকে রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু। রথযাত্রা উপলক্ষে টুইটারে প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার লেখেন, ‘আমি প্রার্থনা করি ভগবান জগন্নাথ যেন সমগ্র দেশবাসীকে আশীর্বাদ করেন।’ একই সঙ্গে দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্য এবং সমৃদ্ধির কামনা করেন তিনি। রথযাত্রা উপলক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহ আহমেদাবাদের জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিয়েছেন এবং মঙ্গলারতি করেছেন। পাশাপাশি জানা যাচ্ছে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপরাষ্ট্রপতি টুইটারে এদিন লিখেছেন, ‘রথযাত্রা উপলক্ষে আমি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি সকলে সুস্থ থাকুন এবং ভালো থাকুন।’
উল্লেখ্য, আজকের এই রথযাত্রা উপলক্ষে চলতি সপ্তাহের প্রথম থেকেই পুরীতে ভিড় জমাতে শুরু করেন দর্শনার্থীরা। ফলে সপ্তাহের প্রথম থেকেই আঁটসাঁট নিরাপত্তার পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির উপরেও কড়া নজর ছিল প্রশাসনের। জানা যাচ্ছে গত দু বছর এই রথযাত্রা বন্ধ থাকার কারণে ভক্তকুলের সমাগমের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কয়েক লাখ ভক্ত এবং দর্শনার্থী পুরীর মন্দির চত্বরে ভিড় জমিয়েছেন। তাঁদের উপস্থিতিতে ঢিলে চালে ধীরে ধীরে মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।
