করোনায় মৃত বাবা, শোকে চিতায় ঝাঁপ মেয়ের

করোনায় মৃত বাবা, শোকে চিতায় ঝাঁপ মেয়ের

জয়পুর : করোনার প্রকোপে বেহাল অবস্থা দেশের৷ দ্বিতীয় ঢেউয়ে যেমন হু হু করে বেড়েছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা, তেমনই বাতাস ভারী হয়েছে স্বজনহারার হাহাকারে৷ একদিকে হাসপাতালে ঠাঁই নেই, অক্সিজেনের সংকট, অন্য দিকে শ্মশানে জ্বলছে গণচিতা৷ যেদিকে তাকানো যাক শুধুই মর্মান্তিক ছবি৷ এমনই এক চোখে জল এনে দেওয়া করুণ কাহিনি দেশের সামনে তুলে ধরল রাজস্থানের বারমের জেলা৷ রূপ কানোয়ারের রাজ্য সাক্ষী থাকল এক সহমরণের চেষ্টার৷ তবে এবার আর সতীদাহ নয়, বাবার জ্বলন্ত চিতায় ঝাঁপ দিলেন মেয়ে৷

কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৭৩ বছরের দামোদরদাস শারদা৷ করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর বারমের জেলার বাসিন্দা দামোদরদাসকে রবিবার ভর্তি করা হয় জেলা হাসপাতালে৷ সেখানেই মঙ্গলবার মারা যান দামোদরদাস৷ তাঁর মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে৷ তবে সপ্ততিপর বৃদ্ধের মৃত্যুর জন্য শোকের পরিণতি এত মর্মান্তিক হতে পারে, তা বোধ হয় ভাবতে পারনেনি কেউই৷ করোনা আক্রান্ত হয়ে বাবার মৃত্যুর দুঃখে শেষকৃত্য চলার সময় জ্বলন্ত চিতাতেই ঝাঁপ দিলেন মেয়ে৷

পুলিশ জানিয়েছে, দামোদরদাসের শেষকৃত্য যখন চলছিল, তখন তাঁর তিন মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ৩৪ বছরের চন্দ্রা শারদা হঠাৎই ঝাঁপ দেন জ্বলন্ত চিতায় ৷ ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠে কাছাকাছি থাকা লোকজন যখন কোনওরকমে তাঁকে জ্বলন্ত চিতা থেকে টেনে বের করে আনেন, তত ক্ষণে চন্দ্রার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে৷ অগ্নিদগ্ধ চন্দ্রাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে, সেখান থেকে তাঁকে যোধপুরের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয় ৷ কোতোয়ালি থানার পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, দামোদরদাস শারদার তিনটি মেয়ে ৷ তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট মেয়েটি জ্বলতে থাকা চিতায় ঝাঁপ দেন৷ মেয়েটি জোর করেই বাবার শেষকৃত্যে গিয়েছিল বলে জানান ওই পুলিশ আধিকারিক৷ উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই মারা গিয়েছেন দামোদরদাসের স্ত্রীও৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 + twenty =