নয়াদিল্লি: দেশের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে ফের বিপাকে কংগ্রেস। সৌজন্যে রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সম্প্রতি তাঁর রাষ্ট্রপতি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কার্যত উত্তাল সংসদ। ঘটনার সূত্রপাত বুধবার বিকেলে। এদিন অধীর সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ভুল করে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে সম্বোধন করেন। তাঁর সেই মন্তব্যকে সামনে রেখেই আজ বৃহস্পতিবার সংসদে কংগ্রেসকে কার্যত তুলোধোনা করেছে বিজেপি দল। ফলে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে বৃহস্পতিবার সকালেই একটি ভিডিও বার্তায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চাইলেন রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
এদিন টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘ দেশের রাষ্ট্রপতি, তিনি ব্রাহ্মণ হোক কিংবা জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতিই হয়। তাকে তাঁর পদের জন্য সর্বদা সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়। গতকাল যখন আমরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলাম এবং আমার মতোই বাকি কংগ্রেস সাংসদরা প্রতিবাদ মিছিল বের করে রাষ্ট্রপতি ভবনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম তখনই কয়েকজন সাংবাদিকের মুখোমুখি হই আমি। সেই সময়ে আমার মুখ থেকে ভুলবশত ‘রাষ্ট্রপত্নী’ শব্দটি বেরিয়ে যায়। এটা হয়েছে কারণ বিগত কয়েকদিন ধরে গোটা দেশজুড়ে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন আমাদের নতুন রাষ্ট্রপতি। আর তাই আমি এই শব্দটি ভুল করে ব্যবহার করে ফেলি। বলতে পারেন মুখ ফসকে বেরিয়ে যায়।’
এখানেই শেষ নয় ওই ভিডিওতে তিনি আরো বলেন, ‘ আমার ভুলবশত ব্যবহার করা একটি শব্দকে সামনে রেখেই আজ সকাল থেকে ‘বাওয়াল’ শুরু হয়েছে। এই ঘটনা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক। আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি বিজেপি মশলাদার কোন কিছুকেই ছাড়ে না। যেকোনো ইস্যুকে নিয়েই তাঁরা বড়োসড় রাজনীতি করতে পারে। ঠিক একই ভাবে তাঁরা আজকের এই ছোট ঘটনাকেও বিতর্কের পাহাড়ে পরিণত করেছেন।’
অন্যদিকে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর এই মন্তব্যকে সামনে রেখেই আজ বৃহস্পতিবার কংগ্রেস তথা কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে একের পর এক জোরালো আক্রমণ করেছেন বিজেপি সাংসদরা। এদিন কেন্দ্রীয় নেত্রী স্মৃতি ইরানি সোনিয়া গান্ধীকে আক্রমণ করে বলেন, ‘সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশেই এমন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে সাংসদ হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে যারা দ্রৌপদী মুর্মুকে অপমান করে রাষ্ট্রপত্নী বলছেন। সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বেই কংগ্রেস নেতা নেত্রীরা সাংবিধানিক সর্বাধিনায়ককে অপমান করার সাহস দেখাচ্ছেন। কংগ্রেস দল দেশের প্রথম জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত রাষ্ট্রপতিকে সর্বসমক্ষে অপমান করেছে। তাই তাদের উচিত অবিলম্বে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।’ এর পাশাপাশি এদিন স্মৃতি ইরানি আরও বলেন, ‘কংগ্রেস নেতাদের উচিত প্রকাশ্য রাস্তায় বেরিয়ে শুধুমাত্র দ্রৌপদী মুর্মু নয়, তাঁর সম্প্রদায়ভুক্ত এবং তাঁর অফিসে নিযুক্ত সকল মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া।’