নিতিশের ডিগবাজির চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছিল দু’মাস আগেই

নিতিশের ডিগবাজির চিত্রনাট্য তৈরি হয়েছিল দু’মাস আগেই

পাটনা: ফের একসঙ্গে নীতীশ-তেজস্বী। গঠিত হল ‘চাচা-ভাতিজার’ সরকার। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবারই বিহারে বিজেপি এবং জেডিইউ সরকারের পতন ঘটেছে। বিজেপির সঙ্গে সমস্ত জোট বন্ধন ছিন্ন করে এদিন দুপুরে সোজা লালুর বাড়িতে ছোটেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সেখানে আগাম জোট বন্ধনের হিসাব পাকা করেই বিকেলে সরাসরি রাজভবনে, জমা দেন নিজের ইস্তফা পত্র। আর তার পরের দিনই তেজস্বীকে সঙ্গে নিয়ে অষ্টম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হলেন নীতীশ কুমার। ডেপুটি হলেন তেজস্বী। নীতীশ কুমারের রাতারাতি এই ভোল বদলে বিহারে বড়সড় ধাক্কা খেল গেরুয়া শিবির। তবে জোট ভাঙ্গার এই খেলা রাতারাতি শুরু হয়নি, ঘনিষ্ঠ মহান সূত্রে খবর নীতীশ কুমার ভিতরে ভিতরে প্রায় দু মাস ধরেই লিখছিলেন তাঁর এই ডিগবাজির চিত্রনাট্য। আসল বিষয়টি হল, বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই বিজেপির সঙ্গে জেডিউয়ের সম্পর্ক একেবারে খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছিল। প্রথমে এনআরসি, সিএএ, পরে অগ্নিপথের মতো একাধিক ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে গলা চরাতে দেখা গিয়েছিল নীতীশ কুমারকে। আর তাতেই বিজেপির সঙ্গে জেডিইউয়ের মধ্যেকার ফাটল একটু একটু করে ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছিল।

জানা গিয়েছে বিহারের পালাবদল নিয়ে বিগত দু মাস ধরে আলোচনা চলছিল লালু প্রসাদ যাদব, নীতীশ কুমার এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বদের মধ্যে। নতুন সরকার গঠনের পর কোন দল কোন দপ্তর পাবে, কোন দলের সদস্যকে মন্ত্রিসভার স্থান দেওয়া হবে সে ব্যাপারেও পাকা কথা হয়েই আছে। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের দাবি, ১৫ দিন আগেই নাকি নীতীশ এবং লালুর মধ্যে নতুন জোটের এই চুক্তির কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। সেটাই বাস্তবায়িত হয়েছে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার। অন্যদিকে গত ২২ এপ্রিল রাবড়ি দেবীর বাসভবনে ইফতার পার্টির পর আরজেডি বিধায়ক তথা লালুপুত্র তেজ প্রতাপ দাবি করেছিলেন, শীঘ্রই বিহারে সরকার গঠন করতে চলেছে আরজেডি। ঘটনাচক্রে সেই ইফতার পার্টিতে আবার নীতীশ কুমারও উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, জোট ভাঙ্গার পরিকল্পনা তলে তলে তখন থেকে শুরু হয়েছিল।

 তবে নীতীশ যে পাল্টি খেতে চলেছেন সেই খবর নাকি বিজেপির কাছে আগের থেকেই ছিল। আর তাই বিজেপির গতিবিধির উপর করা নজর রাখছিল গেরুয়া শিবির। তবে দুই দলের মধ্যে তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে গতকাল বিজেপির তরফ থেকেও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারাও আর জেডিইউ-এর সঙ্গে জোটে থাকতে চান না। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিহারে একাই লড়বে এবং তার ফলাফলও ভালই হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 4 =