এক পায়ে হেঁটেই এক কিলোমিটার দূরের স্কুলে যাওয়া সীমার পাশে এবার সোনু

এক পায়ে হেঁটেই এক কিলোমিটার দূরের স্কুলে যাওয়া সীমার পাশে এবার সোনু

পাটনা: বছর দুয়েক আগে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় বাদ গিয়েছে একটা পা। এত ছোট বয়সে এত বড় এবং ভয়াবহ সত্যের মুখোমুখি কিভাবে দাঁড়াবে বছর দশকের ছোট্ট মেয়েটি সেই চিন্তায় যখন রীতিমত পাগল-পাগল অবস্থা পরিবার-পরিজনের, ঠিক তখনই সীমার মনের জোর এবং আত্মবিশ্বাস সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। বুধবার সকাল থেকেই বিহারের এই ছোট্ট মেয়েটির ভিডিও দেশবাসীর মুঠোফোনে ঘুরছে। এক রাতেই ভাইরাল সীমা। তার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে যদিও।

সম্প্রতি জানা গিয়েছে পা বাদ গেলেও পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অদম্য ইচ্ছাকে কোনও মতেই বিসর্জন নেয়নি সীমা। উল্টে এক পায়ের উপর ভর দিয়েই প্রায় এক কিলোমিটার পথ হেঁটে পাশের গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা চালাচ্ছে সে। বছর-দশেকের এই ছোট্ট মেয়েটির অদম্য লড়াই দেখে মুগ্ধ দেশবাসী। ইতিমধ্যে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল স্বয়ং সীমার এই লড়াই নিয়ে একটি টুইট করেছেন। আর এবার এই ছোট্ট সাহসী মেয়েটির পাশে এসে দাঁড়ালেন বলিউডের ‘রিয়েল হিরো’ সোনু সুদ। ভিডিয়োটি দেখার পরই তিনি টুইট করেন, ‘এর পর আর এক পায়ে নয়, দু’পায়ে হেঁটেই স্কুল যাবে সীমা। টিকিট পাঠাচ্ছি। দু’পায়ে হাঁটার সময় এসে গিয়েছে।’

তবে একা সোনু নয়, ইতিমধ্যেই সীমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন জেলাশাসক স্বয়ং। বুধবার ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও দেখেই বুধবার বিকেলে সীমার বাড়িতে যান জেলাশাসক অবনীশ কুমার। সীমা চলার পথকে সুগম করতে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি ট্রাইসাইকেল। সঙ্গে সীমাকে কৃত্রিম পা দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়। জেলাশাসক অবনীশ বলেন, ‘জেলা প্রশাসন এই ছোট্ট মেয়েটিকে সব রকম ভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত। ওর নিষ্ঠা এবং অধ্যাবসায় অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই মেয়ে জীবনে অনেক ভাল কাজ করবে।’

বিহারের জামুইয়ের ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা সীমা। বছর দু’য়েক আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা বাদ যায় তার। এদিকে তার নিজের গ্রামে এখনও পর্যন্ত কোনও স্কুল তৈরি হয়নি। ফল পড়াশোনা বন্ধ হতেই বসেছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কাছে হার মানেনি সীমা। তার অদম্য জেদের কাছে হার মানে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও। এক পায়েই পিঠে ব্যাগ তুলে নেয় সে এবং ওই এক পায়ে ভর করেই এক কিলোমিটার দূরের স্কুলে পড়তে যাওয়া শুরু করে। সীমার স্বপ্ন শিক্ষক হওয়ার। আর তার এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে এই মুহূর্তে তার পাশে গোটা দেশ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 9 =