নয়াদিল্লি: বিশ্বের সর্বাপেক্ষা উন্নত ও ধনী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির প্রিয় পাত্রদের তালিকায় আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেকথা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। আর সেই রাষ্ট্রপতির এবার ভারতের মাটিতে পদার্পণ করছেন। ইতিমধ্যেই স্যোশাল মিডিয়ায় নিজের ও মোদিজির জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে টুইটে নিজের উচ্ছাস প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন জুকারবার্গের ফেসবুকে তিনিই জনপ্রিয়তার শীর্ষে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় স্থানে। সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই এবার ভারতে আসছেন তিনি। সেই অর্থে তাঁর এই সফরকালে মোদিজির জনপ্রিয়তার খ্যাতির বিষয়টিকে যেন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে গুজরাট সরকার। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মোদির মডেল রাজ্য গুজরাটের আহমেদাবাদে ঘন্টা তিনেক সময় কাটাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর এই মাত্র তিন ঘন্টা সময় কতটা মহার্ঘ্য হতে পারে তা দেখে শুনে রীতিমতো তাজ্জব বনে গেছেন এদেশের মানুষ। যেদেশে আর্থিক দৈন্যতা এখন বিশ্বের ছোট ছোট দেশগুলির কাছেও ঠাট্টার বিষয় হয়ে উঠেছে। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহমেদাবাদে থাকার এই ঘন্টা তিনেক সময়ের দাম ১০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে দেশের চরম আর্থিক দৈন্যতা কোনোভাবেই বাঁধ সাধছেনা এই হাই প্রোফাইল সফরের জন্য বিপুল পরিমাণ খরচে। আহমেদাবাদ মুনিসিপাল করপরেশন এবং আহমেদাবাদ আরবান ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন যৌথভাবে এই ব্যয় ভার বহন করবে।
ট্রাম্পকে স্বাগত জানাতে শুধু ফুলের জন্যই খরচ ৩.৭ কোটি টাকা। চিম্মানভাই প্যাটেল ব্রিজ থেকে জুন্ডাল সার্কেল সহ মোতেরা পর্যন্ত আহমেদাবাদের রাস্তা সাজানো হবে এই ফুল দিয়ে। গান্ধী আশ্রম থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত মোদি ও ট্রাম্পের জন্য শোভাযাত্রায় খরচ ৮ কোটি। আহমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়াম থেকে বিমানবন্দরে যাতায়াতের দেড় কিলোমিটার রাস্তা সহ ১৭টি রাস্তা পুনর্নির্মাণের জন্য ৬০ কোটি টাকা। রাস্তা সহ এলাকা মনোরম করে সাজিয়ে তুলতে খরচ ২০ কোটি টাকা।
তবে নগরসজ্জার ক্ষেত্রে এই মুক্ত হস্তে খরচের মধ্যেই লুকিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার প্রচেষ্টা। মোদি সরকারের স্বচ্ছভারত-নতুন ভারতের দারিদ্রতা দৈন্যতার লজ্জানক চিত্র যেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিগোচর না হয় তার প্রস্তুতি হিসেবে প্রথমেই শুরু হয়েছিল শহরের বস্তি এলাকাগুলি অদৃশ্য করার পরিকল্পনা। তবে এর জন্য বস্তিগুলোর চেহারায় কোনো পরিবর্তন আসেনি বরং সেই কদর্য দৃশ্য যেন ট্রাম্পের চোখে না পড়ে তার জন্য বস্তি সংলগ্ন রাস্তার ধারে ৪০০ মিটার দীর্ঘ সাত ফুট উঁচু পাঁচিল তুলে দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমে জানা গেছে সরকারি আধিকারিকরা এই পাঁচিলকে সৌন্দর্যায়ন ও নিরাপত্তার কারণ হিসেবে বলতে চাইলেও, বিল্ডিং কন্সট্রাকশন সংস্থা সূত্রে জানা গেছে আসল কারণ অর্থাৎ বাস্তব চিত্র গোপন রাখতেই এই ব্যবস্থা।