জয়পুর: আজ থেকে বিশ বছর আগের কথা৷ রেখার বয়স তখন সবে মাত্র এক৷ সেই দুধের শিশুকেই বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল তাঁর পরিবার৷ কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর শৈশবের বিয়ে অস্বীকার করেন তিনি৷ বিবাহ বন্ধন থেকে মুক্তি পেতে কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। সওয়াল-জবাবের পর রাজস্থান আদালতের পর্যবেক্ষণ, শৈশবে হওয়া সেই বিয়ে বৈধই নয়৷ দুই দশক পর বিয়ে নামের এই বেড়াজাল থেকে মুক্তি পেয়ে বেজায় খুশি রেখা।
আরও পড়ুন- রানী এলিজাবেথের মৃত্যুতে জাতীয় শোকের ঘোষণা, বিবৃতি দিল কেন্দ্র
জন্মের পর থেকে ঠাকুরদার সঙ্গেই থাকতেন রেখা। তাঁর যখন এক বছর বয়স, তখন ঠাকুরদার মৃত্যু হয়৷ এর পরই আত্মীয়-স্বজনেরা স্থানীয় এক বালকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন৷ বিয়ে হয়ে গেলেও বাপের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। তবে রেখা এখন সাবালিকা৷ বছর খানেক আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফের বিয়ে করার জন্য রেখার উপর চাপ দিতে শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ছোটবেলায় বিয়ে হলেও বড় হওয়ার পর ফের বিয়ে দেওয়ার প্রথা রয়েছে রাজস্থানের কিছু কিছু এলাকায়। এই প্রথাটি ‘গৌনা’ নামে পরিচিত৷ কিন্তু ফের বিয়ের পিড়িতে বসতে নারাজ কনে৷ এই জোরজবরদস্তির বন্ধন থেকে মুক্তি চেয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দ্বারস্থ হন তিনি।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্তা জানান, বড় হয়ে রেখা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন খাপ পঞ্চায়েত বসিয়েছিলেন। খাপের নিদান, বিয়ে করতে না চাইলে ১০ লক্ষ টাকা ‘ক্ষতিপূরণ’ দিতে হবে রেখাকে। নিরুপায় হয়ে রাজস্থানের একটি আদালতে মামলা করেন রেখা। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে কোর্ট রায় দেয়৷ আদালত সাফ জানায়, এক বছর বয়সী এক শিশুর বিয়ে আইনসিদ্ধ নয়। বিচারক প্রদীপকুমার মোদী জানান, একশো বছরের চেষ্টাতেও আমাদের দেশ থেকে বাল্যবিবাহের মতো প্রথা দূর করা সম্ভব হয়নি। এর বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে৷
রেখা এখন ২১-এর তরুণী৷ তাঁর দু’চোখ ভরা স্বপ্ন৷ সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, পড়াশোনা করে নার্স হতে চান তিনি৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>
