কলকাতা: সংসদের বিশেষ অধিবেশনের সবচেয়ে বড় চমক ছিল মহিলা সংরক্ষণ বিল৷ তিন দশক পর গত বুধবার লোকসভায় পাস হয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রস্তাবিত মহিলা সংরক্ষণ বিল। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল ঐতিহাসিক এই বিল। মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হতেই এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের প্রশংসায় মুখর হন উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়।
বৃহস্পতিবার রাত ৯.৪৫৷ সংসদের উচ্চকক্ষে ধ্বনিভোটে পাশ করা হয় মহিলা সংরক্ষণ বিল৷ বিলের পক্ষে রাজ্যসভায় ভোট পড়েছে ২১৫টি৷ বিপক্ষে শূন্য! রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি ধনকড় বিল পাশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এই ঘটনা নারী শক্তির ক্ষমতায়নের দিকে দেশের যাত্রার এক মাইলফলক’’৷ সংসদের দুই কক্ষে বিল পাশের পর অপেক্ষা শুধু রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের৷ তিনি অনুমোদন দিলেই আইনে পরিণত হবে এই বিল৷ দুই কক্ষেই বিল পাশে হওয়ায় সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷
এই বিল পাশ হওয়ার অর্থ, এবার থেকে লোকসভায় ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য। এটি সংবিধান বিল পাশ হওয়ার জন্য সভার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। বিনা বাধায় মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়ে গেল সংসদে৷ যা নিশ্চিত ভাবেই ঐতিহাসিক৷ কারণ এর আগে একাধিকবার সংসদের দুই কক্ষে বিলটি পাশ করানোর চেষ্টা হলেও, কোনওবারই তা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৬ সালে লোকসভায় প্রথমবার মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করেছিল এইচ ডি দেবগৌড়া সরকার।তার পর প্রায় ২৭ বছর অতিক্রান্ত। দেবগৌড়ার পর ইন্দ্রকুমার গুজরাল, অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং মনমোহন সিং জমানাতেও মহিলা সংরক্ষণ বিল লোকসভায় পেশ করে তা পাশ করার চেষ্টা হয়েছে। ২০১০ সালে মনমোহন সিং সরকার অবশ্য রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করাতে সফল হয়েছিলেন। কিন্তু লোকসভায় বিলের পক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন না মেলায়, তা সম্ভব হয়নি৷ এতদিন সেটাই সম্ভব হল৷
বিল পাশ হলে লোকসভার ১৮১টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হবে। লোকসভায় তপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত ৮৪টি আসন, তপশিলি উপজাতির জন্য সংরক্ষিত ৪৭ আসনেের মধ্য ৩৩ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হবে। পাশাপাশি, সমস্ত বিধানসভাগুলিতেও ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে মহিলাদের জন্য।