নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের খবরের শিরোনামে নন্দীগ্রাম। সামান্য একটি সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল নন্দীগ্রামে। আর সেই সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলকে বিরাট ব্যবধানে হারিয়ে দিল বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী কেন্দ্রের ভেকুটিয়া সমবায় সমিতির নির্বাচনে বিরাট জয়ের পর গেরুয়া শিবির যে যথেষ্ট চাঙ্গা হয়ে উঠল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
১২ আসন বিশিষ্ট সমবায় সমিতির পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে ১১-১ ব্যবধানে জয়ী হয়েছে বিজেপি। রবিবার সকালে থেকেই ভেকুটিয়া জুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জয়ের পর স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। এর পাশাপাশি নির্বাচন ঘিরে বিজেপি ও তৃণমূল একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করেছে।
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে নন্দীগ্রামে সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে একটা মহড়া হয়ে গেল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। কিছুদিন আগেই নন্দীগ্রাম-২ নম্বর ব্লকের একটি সমবায় সমিতির নির্বাচনে তৃণমূল জয় পেয়েছিল। এবার বড় জয় পেল বিজেপি। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র নির্বাচনের ফল প্রসঙ্গে বলেন,” গত বিধানসভা নির্বাচনে ভেকুটিয়া অঞ্চলে আমরা সাড়ে চার হাজার ভোটে পিছিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা যে ১১টি আসনে আজ হেরেছি সেখানে ব্যবধান অত্যন্ত কম। কোথাও কোথাও পাঁচ-সাত ভোটে হার হয়েছে। এতেই প্রমাণিত ভেকুটিয়াতে মানুষ তৃণমূলের পক্ষে ফিরছেন৷”
অন্যদিকে তৃণমূল যে একটি আসনে জিতেছে সেখানে তাদের জয়ের ব্যবধান মাত্র এক ভোট। অর্থাৎ কোনও রকমে একটি আসনে জিতে মুখরক্ষা করেছে তৃণমূল। বিজেপির দাবি, শান্তিপূর্ণ ভোট হলে সব জায়গায় তৃণমূল হারবে।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল এবং বিজেপি যুযুধান দুই পক্ষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিসেব কষতে ব্যস্ত। নন্দীগ্রামের সমবায় সমিতির নির্বাচনে জয়ের প্রভাবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ বিজেপি দখল করতে পারবে বলে আত্মবিশ্বাসী গেরুয়া শিবির। বিজেপির দাবি শান্তিপূর্ণ ভোট হলে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ তাদের হাতে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। উল্টো দিকে সংগঠনে কতটা ফাঁকফোকর রয়েছে সেই অনুসন্ধানে ব্যস্ত তৃণমূল নেতৃত্ব।
আসলে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলনের হাত ধরেই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। সেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। সেই ধাক্কা এখনও কুড়ে কুড়ে খায় জোড়াফুল শিবিরকে। তাই নন্দীগ্রামে সমবায় সমিতির নির্বাচনে পরাজয় বিশ্লেষণ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নবান্ন অভিযানের পর নন্দীগ্রামের এই জয় গেরুয়া শিবিরকে যে অনেকটাই উজ্জীবিত করল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।