নিজস্ব প্রতিনিধি: মহারাষ্ট্রে বিজেপির মদতে ভেঙে গিয়েছে উদ্ধব ঠাকরের সরকার। ঝাড়খন্ডে যে কোনও দিন সরকার পড়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অতীতে কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকার ভেঙে রাতারাতি সেখানে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। এমন উদাহরণ আরও আছে। কিন্তু বর্তমানে রাজস্থানে যা চলছে তাতে বিজেপি মেঘ না চাইতেই জল দেখছে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও দলের গোষ্ঠীকোন্দলের কারণে যে কোনও সময় সরকারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। একদিকে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে চলছে ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা। আর তার মধ্যেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট শিবিরের সঙ্গে শচীন পাইলট শিবিরের যে বিরোধ দেখা দিয়েছে তাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। অক্টোবরে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন হবে। সেখানে জয়ী হয়ে গেহলটের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা যখন অত্যন্ত বেশি ছিল ঠিক তখনই সামনে চলে এল রাজস্থান কাণ্ড।
হাইকমান্ড চায় রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন অশোক গেহলট। সেই সঙ্গে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীরা চাইছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে শচীন পাইলটকে বসাতে। আর সেটা কিছুতেই মানতে পারছে না গেহলট শিবির। বর্তমানে রাজস্থানে কংগ্রেস বিধায়কের সংখ্যা ১০৭। তাঁদের মধ্যে অন্ততপক্ষে ৯০ জন গেহলটের অনুগামী বলেই পরিচিত। ইতিমধ্যেই তাঁরা বিধায়ক পদ থেকে গণ ইস্তফার হুমকি দিয়েছেন। তাঁদের দাবি শচীন পাইলট নন, গেহলট শিবিরের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। হাইকমান্ড সেটা না করলে তাঁরা সকলেই ইস্তফা দেবেন। স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস হাইকমান্ড। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি রাজস্থানে আরও সুবিধাজনক জায়গা চলে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আগামী বছর মরুরাজ্যে বিধানসভা ভোট। এমনিতেই পাঁচ বছর অন্তর রাজস্থানে সরকার বদল হওয়ার রীতি রয়েছে। সেই সূত্রে আগামী বছরের নির্বাচনে জিতে বিজেপি রাজস্থানে ক্ষমতায় আসবে বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত। তার আগে বিজেপির বাড়তি পাওনা কংগ্রেসের তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। যাকে বলা যায় অনুকূল অবস্থা বিজেপির হাতে তুলে দিল কংগ্রেস। বর্তমানে যে দুটি রাজ্যে কংগ্রেস এককভাবে ক্ষমতায় রয়েছে তার মধ্যে একটি হল রাজস্থান, অপরটি ছত্তিশগড়। এছাড়া ঝাড়খণ্ড এবং তামিলনাড়ুতে শরিক দল হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। রাজস্থানে কংগ্রেস বিধায়করা যেভাবে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে এনেছেন তাতে হতবাক রাজনৈতিক মহল। তবে কি নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে রাজস্থানের শাসন ক্ষমতা হারাতে চলেছে কংগ্রেস? সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর গোটা বিষয়টি নিয়ে জল মাপার কাজ করছে গেরুয়া শিবির। আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেদিকে নজর রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের। অন্যদিকে গোটা বিষয়টি নিয়ে গেহলট ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে কংগ্রেস হাইকমান্ড কি কড়া পদক্ষেপ করে সেদিকেও নজর থাকবে সবার।