সিবিআই নয়, ইডিতেই আস্থা দিলীপের, সিবিআই নিয়ে বিস্ফোরক দাবি কেন করলেন দিলীপ?

সিবিআই নয়, ইডিতেই আস্থা দিলীপের, সিবিআই নিয়ে বিস্ফোরক দাবি কেন করলেন দিলীপ?

নিজস্ব প্রতিনিধি: শুধু সিবিআই তদন্ত করলেই হবে না, তার রেজাল্ট চাই। কয়েক মাস আগেই এ কথা বলতে শোনা গিয়েছিল দিলীপ ঘোষকে। এবার নতুন করে তিনি বিষয়টি নিয়ে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটিকে। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সরাসরি তাদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় সিবিআই যে তদন্ত করছে তার চেয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির তদন্তেই বেশি আস্থা রাখছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

শনিবার মেদিনীপুরে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর পরদিনই রবিবার কলকাতায় একইভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন দিলীপ। তাঁর কথায়, “সিবিআই যতদিন তদন্ত করছিল কেউ গ্রেফতার হচ্ছিল না, উদ্ধারও হচ্ছিল না। ইনকাম ট্যাক্সের কার্যকলাপের মধ্যেও ভূত ছিল। ইডি এসে সব মাটি করে দিল। ইডি যা করতে পারছে সিবিআই তা পারেনি। সর্ষের মধ্যেই ভূত আছে! সিবিআই দায়িত্ব নিয়েছিল, কিন্তু কিছু করতে পারেনি। তাই তৃণমূলের নেতারা চমকে গিয়েছেন। ভাবছেন ইডি কোথা থেকে হাজির হল?” এখানেই থেমে থাকেননি মেদিনীপুরের সাংসদ। তিনি বিস্ফোরক ভঙ্গিতে বলেন, “সিবিআইয়ের একটি অংশের সঙ্গে সেটিং হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল নেতাদের। সেটা বুঝতে পেরেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত কয়েক বছর ধরে সিবিআই তদন্ত চলছিল, কিন্তু কোনও ফল হচ্ছিল না। কোনও তথ্য আসছিল না, কেউ ধরা পড়ছিল না। আসলে সর্ষের মধ্যে ভূত ছিল। কিছু অফিসার বিক্রি হয়ে যাচ্ছিলেন। কেউ লাখে, কেউ কোটিতে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশে ইডি এখানে এসেছে। যাঁরা সেটিং করেছেন, তাঁরা এখন বলছেন ইডি কেন? কারণ এই কুকুরটা পোষ মানবে না, কামড়াবে। তবে অসুখ  অনুযায়ী ওষুধ কম হয়ে যাচ্ছে।”

আসলে বাম-কংগ্রেস বহুদিন ধরেই ইডি-সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তাদের অভিযোগ তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রের ‘সেটিং’ হয়েছে বলেই সিবিআই রাজ্যের শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাতে অসুবিধার মধ্যে পড়েছে রাজ্য বিজেপি। তাই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৎকালীন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিষয়টি নিয়ে বহুবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সম্ভবত সেই কারণেই তিনি সেই প্রসঙ্গ নতুন করে তুলে ধরেছেন এবার। এই পরিস্থিতিতে সিবিআই আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত। আসলে ইডি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পরই তৃণমূল ব্যাকফুটে চলে যায়। এরপরই সক্রিয়তা বাড়ায় সিবিআই। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে গ্রেফতার করে তারা। যাতে রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের অস্বস্তি বহু গুণে বেড়ে যায়। সম্ভবত সেই কারণেই ইডিতে বেশি আস্থা রেখেছেন দিলীপ। তবে কি ইডি এই সক্রিয়তা আগে না দেখালে সিবিআইয়ের তৎপরতা বাড়ত না? এই প্রশ্নই তুলে দিয়েছেন তিনি। তাই আগামী দিনে সিবিআই তৎপরতা বাড়িয়ে কি পদক্ষেপ করে সেদিকেই নজর থাকবে সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × three =