কাঁথিতে অভিষেকের পাল্টা সভা শুভেন্দুর, পাল্টা জবাব দিতে এত কেন মরিয়া বিজেপি?

কাঁথিতে অভিষেকের পাল্টা সভা শুভেন্দুর, পাল্টা জবাব দিতে এত কেন মরিয়া বিজেপি?

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য রাজনীতি শুধুই যেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর দ্বৈরথে পরিণত হয়েছে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে রাজি নন। গত শনিবার বিরোধী দলনেতার খাসতালুক কাঁথিতে সভা করে তাঁকে তীব্র আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক  বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সভার দু’দিনের মধ্যেই জেলা বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে অভিষেকের পাল্টা সভা কাঁথিতেই করবে তারা। সব কিছু ঠিক থাকলে ২১ ডিসেম্বর সেই সভা হতে পারে। বলাবাহুল্য সেই সভার প্রধান বক্তা হতে চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে কোন মাঠে সভা হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। অভিষেক সভা করেছিলেন কাঁথির প্রভাত কুমার কলেজ ময়দানে। জেলা বিজেপির একাংশ চাইছেন সেই মাঠেই পাল্টা সভা করতে। কিন্তু সেই মাঠে সভা করার অনুমতি বিজেপি পাচ্ছে না বলেই খবর। কারণ যে সময় সভা করার কথা ভাবছে বিজেপি, তখন ওই মাঠে অন্য অনুষ্ঠান রয়েছে। তাই বিকল্প সভাস্থল দেখছে গেরুয়া শিবির। ওই মাঠ থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে থাকা স্টেশন সংলগ্ন মাঠে সভা হতে পারে। সূত্রের খবর শুভেন্দু স্টেশন সংলগ্ন মাঠেই সভা করতে চাইছেন। শীঘ্রই বিষয়টি চূড়ান্ত করে জেলা প্রশাসনের কাছে বিজেপি সভার ব্যাপারে অনুমতি চাইতে চলেছে বলে খবর। জানা গিয়েছে  রবিবার রাতে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই ঠিক হয় দ্রুত সভা করে অভিষেকের আক্রমণের যাবতীয় জবাব দেবেন শুভেন্দু। সেই সূত্রেই দ্রুততার সঙ্গে সভা করতে চলেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।

শনিবার শুভেন্দু এবং অভিষেকের জোড়া সভা দেখেছে রাজ্যবাসী। সেদিন পরস্পরের খাসতালুকে গিয়ে যুযুধান দুই শিবিরের অন্যতম দুই শীর্ষ নেতা সভা করেছেন। একে অপরকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। কিন্তু কাঁথিতে গিয়ে শুভেন্দুকে যেভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন অভিষেক, তাতে দ্রুত এর জবাব দেওয়া  উচিত বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি মনে করছে। সেদিন শুভেন্দুকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেছিলেন,”১৫ দিন সময় দিয়ে গেলাম। এই কলেজের মাঠে তুমি তোমার খাতা নিয়ে এসো। আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। লোকের সামনে যদি উলঙ্গ করতে না পারি, রাজনীতিতে পা রাখব না”। সেই সঙ্গে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন অভিষেক। এরপরই শুভেন্দু জেলা বিজেপি নেতাদের জানিয়ে দেন তিনি দ্রুত কাঁথিতে সভা করতে চান।

রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহূর্তে অভিষেক ও শুভেন্দুর লড়াই নিঃসন্দেহে অন্যতম চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে রাজি নন। আর দু’জনেই দুর্নীতি ইস্যুতে একে অপরকে বিঁধে চলেছেন। এই পরিস্থিতিতে কাঁথিতে সভা করে শুভেন্দু পাল্টা জবাব দেবেন, এটাই প্রত্যাশিত ছিল। তাঁর খাসতালুকে এসে অভিষেক যেভাবে অধিকারী পরিবারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন, তা মোটেও ভাল ভাবে নেননি শুভেন্দু। শুভেন্দু ভাল করেই জানেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তিনি যদি দ্রুত অভিষেকের বক্তব্যের পাল্টা জবাব না দেন, তাহলে তাঁর জেলায় মুষড়ে পড়বেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। সবচেয়ে বড় কথা অভিষেকের সভায় প্রচুর লোকসমাগম হয়েছিল। তাই শুভেন্দু চান আরও বেশি লোকের জমায়েত করে দেখিয়ে দিতে কাঁথি তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার শেষ কথা তিনিই। তাই তাঁর জেলায় এসে অভিষেক যেভাবে চ্যালেঞ্জ করে গিয়েছেন, এবার তার পাল্টা হিসেবে শুভেন্দু কি বলেন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × two =